NEWS METRO 24

চট্টগ্রামে খুচরায় সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১৬০ টাকা নির্ধারণ

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মত বিনিময়

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রমজান উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীদের ভোজ্য তেলের দাম বেঁধে দেয়া হয়েছে। মিল পর্যায়ে প্রতি লিটার ১৫৩ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে ১৫৫ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত টাস্কফোর্স কমিটির মত বিনিময় সভা শেষে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ দাম নির্ধারণের ঘোষণা দেন। আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত পুরো চট্টগ্রাম জেলায় এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে জানিয়ে সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিরূদ্ধে আইনগত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সভায় জানানো হয়।
প্রায় দেড় মাস ধরে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রামেও ভোজ্য তেলের বাজারে অস্থিরতা চলছে। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নেই এই অজুহাতে ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দাম হাতিয়ে নিচ্ছিল অসাধু ব্যবসায়ী চক্র। কোন কোন ক্ষেত্রে কোম্পানি থেকে সরবরাহকৃত তেল বাজারে সরবরাহ না করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেয় ডিলাররা। খুচরা ব্যবসায়ীদের তেলের সঙ্গে নি¤œমানের অন্যান্য পণ্যও কিনতে বাধ্য করছিল তারা। অন্যদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরাও তেলের সরবরাহ নেই ও বেশি দামে কেনার অজুহাতে এক লিটার সয়াবিন তেলের ১৮০ টাকা থেকে ১৯০ টাকা পর্যন্ত দাম রাখছিল ক্রেতাদের কাছ থেকে। বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ পাবার পর সোমবার সরেজমিন পরিস্থিতি দেখতে জেলা প্রশাসককে নিয়ে খাতুনগঞ্জের বাজারে যান মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সেখানে তিনি অভিযোগের সত্যতা পান।
এ পরিস্থিতিতে রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে মঙ্গলবার দুপুরে সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে এ মত বিনিময় সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সভায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ছাড়াও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সার্বিক বাজার পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় অংশ নেন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো। সভায় আমদানি ব্যয়সহ বিভিন্ন খরচ পর্যালোচনা করে সকলের মতামতের ভিত্তিতে প্রতি লিটার ভোজ্য তেল মিল পর্যায়ে ১৫৩ টাকা, খাতুনগঞ্জে ট্রেডিং পর্যায়ে ১৫৫ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, রমজানকে সামনে রেখে ভোজ্য তেল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের অস্থিরতা আমরা দেখতে পাচ্ছি। গতকাল আমরা খাতুনগঞ্জে গিয়ে আমরা দেখেছিল প্রত্যেকটি দোকানে ভোজ্য তেল উধাও হয়ে গেছে। তাই আমরা আজ আমদানিকারক, খাতুনগঞ্জের ট্রেডিং ব্যবসায়ী, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ঠ সকলের সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তের উপনীত হয়েছি যে, প্রতি লিটার সয়াবিন তেল আমদানিকারকরা ১৫৩ টাকায়, খাতুনগঞ্জের ট্রেডার্সরা ১৫৫ টাকায় এবং খুচরা ব্যবসায়ীরা সর্বোচ্চ ১৬০ টাকায় বিক্রি করবেন। এটা আজ থেকে পুরো চট্টগ্রাম জেলায় কার্যকর হবে। এর বাইরে কোন পর্যায়ে ক্উে যদি বেশি দামে বিক্রি করে সেখানে সিটি কর্পোরেশনের টিম থাকবে, জেলা প্রশাসনের টিম থাকবে- তারা সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সাধারণ মানুষকে সুবিধা দেওয়ার জন্য যা যা করার আমাদেরকে অবশ্যই করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাইরে যেসব মুসলিম রাষ্ট্রগুলো রয়েছে বেশির ভাগ দেশে রমজানে সওয়াবের উদ্দেশ্যে কোথাও বিনা মূল্যে আবার কোথাও ভর্তুকি মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করা হয়। আমরা লক্ষ্য করেছি আমাদের দেশে কিছু ব্যবসায়ীর কারসাজির কারণে রাতারাতি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলোর দাম বেড়ে যায়। মেয়র বলেন, আমরা দেখছি প্রতি সেক্টরে এখন অস্থিরতা রয়েছে। সেই অস্থিরতা কমিয়ে আনার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।

Exit mobile version