Home Blog Page 10

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়াতে পারে

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়াতে পারে

নিউজমেট্রো ডেস্ক :

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা নিহতের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে আশংকা করছে দেশটির সরকার। সামরিক সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) এক টেলিভিশন ভাষণে এ আশংকার কথা জানান। তিনি বলেন, ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মান্দালয় ও সাগাইং অঞ্চলে উদ্ধার অভিযান চলছে। এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক মানুষ আটকে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে মিয়ানমারে এক সপ্তাহের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। ৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। এ ছাড়া আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে ভূমিকম্পে নিহতদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

রয়টার জানিয়েছে, শুক্রবারের (২৯ মার্চ) দশমিক মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হাজার ৭১৯ পৌঁছেছে আহত হয়েছেন আরও হাজার ৫২১ জন, নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৪৪১ জন। দেশটির

আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও আশ্রয়ের সংকট চরমে পৌঁছেছে। মান্দালয়সহ বিধ্বস্ত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, পানি ও ওষুধ সহায়তা প্রয়োজন।

বিপর্যস্ত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে জান্তা সরকার। বাংলাদেশ, চীন ও থাইল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে।

ঈদ আনন্দে মুখর বন্দর নগরীর বিনোদন স্পট

ঈদ আনন্দে মুখর বন্দর নগরীর বিনোদন স্পট

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঈদের ছুটিতে জমেছে চট্টগ্রামের বিনোদন স্পটগুলো। তিল ধারণের ঠাই নেই নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও ফয়’স লেক কনকর্ড এমিউজমেন্ট পার্কে। দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর নগরীর বিভিন্ন শিশু পার্ক ও চিড়িয়াখানা।
ঈদের ছুটিতে পাল্টে গেছে নগরীর চিরচেনা দৃশ্য। সকালে ঘুম থেকে ওঠেই কর্মস্থল কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানমুখী দৌঁড়ের তাড়া নেই কারো। তবে আছে আত্মীয়-স্বজন কিংবা বন্ধু-বান্ধবদের বাসা বাড়িতে বেড়ানো কিংবা পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে বের হওয়ার তাগাদা। কর্মব্যস্ততার কারণে যে মানুষগুলোর সাধারণত কোথাও বেড়ানোর ফুরসত মিলেনা- তারাও ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ছুটে যাচ্ছে বিভিন্ন বিনোদন স্পটে।
চট্টগ্রাম নগরীতে হাতেগোনা যে ক’টি বিনোদন স্পট রয়েছে তার মধ্যে দর্শনার্থীদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও ফয়’স লেক এমিউজমেন্ট পার্ক। সারা বছরই এসব স্পট থাকে বিনোদন পিপাসু মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে। আর ঈদের ছুটিতে সে আগ্রহের মাত্রা বেড়ে যায় বহুগুণ।
ঈদের দিন বিকেল থেকেই হাজার হাজার দর্শনার্থীর উপস্থিতিতে ভিন্ন রূপ পায় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। সরেজমিন দেখা যায়, সমুদ্র তীরে বসে কারো দৃষ্টি যাচ্ছে দূর সমুদ্রে ভাসতে থাকা সারি সারি পণ্যবাহী জাহাজের দিকে আবার কারো চোখ সাগর তীরে আঁচড়ে পড়া বড় বড় ঢেউয়ের প্রতি। তীরের কাছাকাছি সাগরে নেমে আনন্দ উপভোগ করছেন অনেকেই। আবার কেউ হাঁটছেন কিংবা বøক দিয়ে তৈরি ওয়াকওয়ের ওপর দিয়ে। সৈকতে গড়ে ওঠা রেস্টুরেন্টগুলোর কাঁকড়া ভাজা কিংবা চিকেন ফ্রাই এর স্বাদ নিচ্ছেন কেউ কেউ। সাগর তীরে অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা ঝিনুক কিংবা অন্যান্য সামগ্রীর দোকানগুলোতেও ঢুঁ মারছে কেউ কেউ। সৈকতে ভাড়ায় খাটানো ঘোড়ায় আরোহন আর স্পিড বোটে সমুদ্র ঘুরে আসার মধ্য দিয়ে বিনোদনের পূর্ণতা উপভোগ করছে এই স্পটে আসা দর্শনার্থীরা।
পতেঙ্গা সৈকত এলাকার দোকানদার আবদুল মান্নান রানা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য বর্ধন প্রকল্প বাস্তবায়িত করায় সৈকতের চেহারা বদলে গেছে। এতে এ স্পটের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও আকর্ষন বেড়েছে। তিনি জানান, ঈদের দিন থেকে শুরু করে প্রতিদিনই বিকেলে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠছে সৈকত এলাকা।
নগরীর বহদ্দার হাট থেকে সপরিবারে সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যাওয়া বেসরকারী চাকুরিজীবী সালমান শরীফ বলেন, ঈদের ছুটিতে সবাই চায় একটু কোথাও ঘুরতে। কিন্তু নগরীতে বেড়ানোর মতো পছন্দসই জায়গা খুব একটা নেই। তাই এতদূরে ছুটে আসা। তিনি বলেন, সমুদ্র তীরে দাঁড়িয়ে দূর সাগরের জলরাশির দিকে তাকালে মন জুড়িয়ে যায়। চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য নিয়ে আসা বড় বড় জাহাজগুলো দেখার সুযোগ আর কোথাও নেই।
নগরীর আরেকটি জনপ্রিয় বিনোদন স্পট ফয়’সলেক কনকর্ড এমিউজমেন্ট পার্কে ঈদের ছুটিতে ভিড় জমছে বিনোদন পিপাসু মানুষের। সেখানে স্পিড বোটে করে পাহাড় ঘেরা লেকে ঘুরে আনন্দ উপভোগ করছে কেউ কেউ। আবার কেউ ছুটে যাচ্ছে সী ওয়ার্ল্ডের সুইমিং পুলে। বাচ্চাদের রাইডসগুলোতে পড়েছে দীর্ঘ লাইন।
কনকর্ড এমিউজমেন্ট পার্কের উপ-ব্যবস্থাপক বিশ্বজিত ঘোষ জানান, সাধারণ সময়ের তুলনায় ঈদের সময় দর্শনার্থীর সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে যায়। তাই ঈদকে কেন্দ্র করে দর্শনার্থীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ও নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দর্শকদের আনন্দ দিতে পার্ককে সাজানো হয়েছে নতুন করে। রাইডসগুলোও সংস্কার করা হয়েছে।
পতেঙ্গা কিংবা ফয়’স লেক ছাড়াও অন্যান্য বিনোদন স্পটগুলোও ঈদের ছুটিতে মুখর হয়ে ওঠছে সব বয়সী মানুষের পদভাবে। এর মধ্যে রয়েছে কাট্টলী সমুদ্র সৈকত, পাহাড়তলী চিড়িয়াখানা, বহদ্দার হাট স্বাধীনতা পার্ক, পতেঙ্গা প্রজাপতি পার্ক, কাজীর দেউড়ি শিশু পার্ক, আগ্রাবাদ শিশু পার্ক, পতেঙ্গা প্রজাপতি পার্ক, শাহ আমানত সেতুসহ বিভিন্ন স্পট।
গুরুজনকে সালাম করে ঈদের সেলামী পাওয়া কিংবা শুধু সেমাই আর কোরমা-পোলাও নিয়ে ঈদ নয়। ঈদের ছুটিতে ভিন্ন কিছু উপভোগ করতে বিভিন্ন বিনোদন স্পটে ছুটে যাচ্ছে মানুষ। আর এর মধ্য দিয়েই তাঁরা খুঁজছে ঈদ আনন্দের পূর্ণতা

 

 

ডাবল মার্ডারের পরিকল্পনায় সাজ্জাদ-তামান্না!

ডাবল মার্ডারের পরিকল্পনায় সাজ্জাদ-তামান্না!

নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি থেকে গত ১৫মার্চ গ্রেফতার করা হয় চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে। সঙ্গে থাকা স্ত্রী তামান্না ওই সময় দাবি করেছিল আরেক সন্ত্রাসী সারোয়ারই সাজ্জাদকে ধরিয়ে দিয়েছে। গ্রেফতারের পরদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে সাজ্জাদের প্রতিপক্ষকে উদ্দেশ্যে করে তামান্না বলেছিলেন ‘খেলা শুরু করেছো তোমরা, আর খেলা শেষ করবো আমরা।’

চট্টগ্রামে ঈদের আগের রাতে প্রাইভেট কারে ব্রাশ ফায়ার করে দুইজনকে হত্যার ঘটনা কি সেই খেলারই অংশ। ঈদের আমেজ ছাপিয়ে এই আলোচনা এখন সবার মুখে মুখে।

সেদিনের ঘটনায় নিহত দু’জন হলেন বখতেয়ার হোসেন মানিক ও আবদুল্লাহ। একই সঙ্গে প্রাইভেট কারে থাকা সারোয়ার বাবলা প্রতিপক্ষের এলোপাথাড়ি গুলির মধ্যেও কৌশলে নেমে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১এপ্রিল) সন্ধ্যায় নগরীর বাকলিয়া থানায় নিহত বখতিয়ার হোসেন মানিকের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় কারাবন্দী সন্ত্রাসী সাজ্জাদ, তার স্ত্রী তামান্নাসহ মোট ৭জনকে আসামী করা হয়েছে। অন্য আসামীরা হলেন- মোহাম্মদ হাছান, মোবারক হোসেন ইমন, খোরশেদ, রায়হান ও বোরহান।

মামলার এজহারে বলা হয়, সারোয়ার হোসেন বাবলার গাড়ির চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন নিহত মানিক। আর সারোয়ারের ব্যক্তিগত কাজকর্ম করতেন নিহত আবদুল্লাহ। গত ২৯ মার্চ দিবাগত রাতে প্রাভেটকারে করে নতুন ব্রিজ এলাকায় আড্ডা দিচ্ছিলেন মানিক, সারোয়ার, আবদুল্লাহ, রবিন, হৃদয় ও ইমন। নতুন ব্রিজ থেকে বাড়ি ফেরার জন্য বহদ্দারহাটের দিকে রওয়ানা হলে রাত ২টার দিকে রাজাখালী ব্রিজের ওপর পৌঁছামাত্র ৬-৭টি মোটরসাইকেল থেকে প্রাইভেটকার লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। গুলিতে গাড়ির পেছনের গ্লাস ছিদ্র হয়ে যায়। তখন মানিক বহদ্দারহাটের দিকে না গিয়ে বাকলিয়া এক্সেস রোড দিয়ে চকবাজারের দিকে যায়। সোয়া ২টার দিকে চকবাজার থানার নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কে মানিক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গাড়ি থামায়। গাড়ির পেছনে থাকা হাছান, ইমন, বোরহান, খোরশেদ ও রায়হানসহ অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জন তাদের হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করে। গুলিতে মানিক ও আবদুল্লাহ জখম হয়। গাড়িতে থাকা সারোয়ার এবং ইমন কৌশলে নেমে যায়৷ এরপর গুলি ছুঁড়তে থাকা আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। মানিক ও আবদুল্লাহকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। আসামি সাজ্জাদ এবং তার স্ত্রী তামান্নার পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা সারোয়ার হোসেন বাবলা ও তার ছেলেসহ অন্যদের হত্যা করার জন্য নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে প্রাইভেটকারটির পিছু নেন বলে বাদী এজহারে উল্লেখ করেন।

জানা যায়, সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ ও সারোয়ার হোসেন বাবলার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্যের বিরোধ চলে আসছে। রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি থেকে গত মাসে সাজ্জাদ গ্রেফতার হবার নেপথ্যে সারোয়ারের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছিল সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না।

ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বেঁচে যাওয়া রবিনও সেদিন বলেছিলেন, সাজ্জাদের সঙ্গে সারোয়ারের আগে থেকে দ্বন্দ্ব ছিল। সম্প্রতি সাজ্জাদের গ্রেপ্তার এবং রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝামেলা বেড়েছে। তাই সাজ্জাদের লোকজন সারোয়ারকে খুন করতে এ হামলা চালাতে পারে।

 

ওয়ানডে ক্রিকেটকে মুশফিকের বিদায়

ওয়ানডে ক্রিকেটকে মুশফিকের বিদায়

স্পোর্টর্স ডেস্ক :

ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। বুধবার ( মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘোষণা দেন তিনি।

ফেসবুকে নিজস্ব একাউন্ট থেকে দেওয়া পোস্টে মুশফিক লিখেছেন, ‘আজ থেকে আমি ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি।  বৈশ্বিক পর্যায়ে আমাদের অর্জন কম। তারপরও যখনই আমি মাঠে নেমেছি শতভাগেরও বেশি দেওয়ার চেষ্টা করেছি। গেল কিছুদিন আমার জন্য খুবেই চ্যালেঞ্জিং ছিল এবং আমি অনুধাবন করেছি যে, এটাই আমার ভাগ্যে লেখা আছে। আমি আমার পরিবার, বন্ধু এবং সমর্থকদের ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা ১৯ বছর আমাকে সমর্থন দিয়ে গেছেন।’

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন মুশফিক। ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও টেস্ট ক্রিকেট চালিয়ে যাবেন মুশি।

 

হাসিনাকে আদালতের সম্মুখিন হতেই হবে : ড. ইউনূস

হাসিনাকে আদালতের সম্মুখিন হতেই হবে : ড. ইউনূস

আনন্দবাজার পত্রিকা :

প্রয়োজনে ভারতে থাকাকালীনই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলির বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে একটি সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি জানিয়েছেন, মানবতার বিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে। আদালতের সম্মুখীন তাঁকে হতেই হবে। কিন্তু হাসিনা বর্তমানে ভারতে রয়েছেন। তাঁর প্রত্যর্পণ চেয়ে ইতিমধ্যে ভারত সরকারকে একটি নিয়মমাফিক চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নয়াদিল্লি সেই চিঠির কোনও উত্তর দেয়নি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ়কে বুধবার একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ইউনূস। সেখানে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, হাসিনার বিষয়ে ঢাকার অবস্থান কী? ইউনূস বলেন, ‘‘বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে। শুধু ওঁর (হাসিনার) বিরুদ্ধেই নয়। ওঁর সঙ্গে আরও যাঁরা যাঁরা যুক্ত ছিলেন, ওঁর পরিবারের সদস্যেরা, ওঁর ঘনিষ্ঠেরা, সকলকেই বিচারপ্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে হবে।’’ ইউনূস জানিয়েছেন, বাংলাদেশে একাধিক অপরাধের জন্য হাসিনার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে দুটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কিন্তু তাঁর সশরীরে উপস্থিতির জন্য বিচারপ্রক্রিয়া আটকে থাকবে না। তিনি বলেন, ‘‘হাসিনা বাংলাদেশে থাকুন বা না থাকুন, উনি ভারতে থাকা অবস্থাতেও আমরা বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করে দিতে পারি।’’

হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর আমলে বহু মানুষকে গুম করে দিতেন। বিনা বিচারে তাঁদের দিনের পর দিন আটকে রাখতেন। এমনকি, কিছু বন্দিকে খুনও করা হত। আচমকা তাঁরা উধাও হয়ে যেতেন। আর তাঁদের খোঁজ পাওয়া যেত না। হাসিনা সরকারের পতনের পর আয়নাঘর নামের এমন একটি গোপন বন্দিশালার কথা প্রকাশ্যে আসে। বহু বন্দিকে সেখান থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সেখানে কী ধরনের অত্যাচারের সম্মুখীন তাঁরা হয়েছেন, তা জানিয়েছেন বন্দিরাই। কিছু দিন আগে এই বন্দিশালা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ইউনূস। তাঁর কথায়, ‘‘এর চেয়ে খারাপ কিছু আর হয় না। কত জন এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, সেই সংখ্যা বুঝে উঠতে সমস্যা হচ্ছে। পূর্বতন সরকারে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই অপরাধের সঙ্গে জুড়ে ছিলেন। কারা ইচ্ছা করে এই কাজ করছিলেন, কারা উপরমহলের নির্দেশে অপরাধ করতে বাধ্য হচ্ছিলেন, তা দেখতে হবে।’’

বাংলাদেশের সরকারি চাকরিতে কোটা বা সংরক্ষণ পদ্ধতির সংস্কার চেয়ে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু হয়েছিল। তার চাপেই গত অগস্ট হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। সেই থেকে তিনি ভারতে রয়েছেন। অভিযোগ, আন্দোলন দমনের জন্য হাসিনা সরকার বহু মানুষকে বন্দি করেছে, হত্যা করেছে। একে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করে তাঁর বিরুদ্ধে বিচার শুরু করতে চায় ইউনূসের সরকার।

চট্টগ্রামে খুচরায় সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১৬০ টাকা নির্ধারণ

চট্টগ্রামে খুচরায় সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১৬০ টাকা নির্ধারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রমজান উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীদের ভোজ্য তেলের দাম বেঁধে দেয়া হয়েছে। মিল পর্যায়ে প্রতি লিটার ১৫৩ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে ১৫৫ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত টাস্কফোর্স কমিটির মত বিনিময় সভা শেষে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ দাম নির্ধারণের ঘোষণা দেন। আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত পুরো চট্টগ্রাম জেলায় এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে জানিয়ে সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিরূদ্ধে আইনগত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সভায় জানানো হয়।
প্রায় দেড় মাস ধরে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রামেও ভোজ্য তেলের বাজারে অস্থিরতা চলছে। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নেই এই অজুহাতে ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দাম হাতিয়ে নিচ্ছিল অসাধু ব্যবসায়ী চক্র। কোন কোন ক্ষেত্রে কোম্পানি থেকে সরবরাহকৃত তেল বাজারে সরবরাহ না করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেয় ডিলাররা। খুচরা ব্যবসায়ীদের তেলের সঙ্গে নি¤œমানের অন্যান্য পণ্যও কিনতে বাধ্য করছিল তারা। অন্যদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরাও তেলের সরবরাহ নেই ও বেশি দামে কেনার অজুহাতে এক লিটার সয়াবিন তেলের ১৮০ টাকা থেকে ১৯০ টাকা পর্যন্ত দাম রাখছিল ক্রেতাদের কাছ থেকে। বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ পাবার পর সোমবার সরেজমিন পরিস্থিতি দেখতে জেলা প্রশাসককে নিয়ে খাতুনগঞ্জের বাজারে যান মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সেখানে তিনি অভিযোগের সত্যতা পান।
এ পরিস্থিতিতে রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে মঙ্গলবার দুপুরে সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে এ মত বিনিময় সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সভায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ছাড়াও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সার্বিক বাজার পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় অংশ নেন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো। সভায় আমদানি ব্যয়সহ বিভিন্ন খরচ পর্যালোচনা করে সকলের মতামতের ভিত্তিতে প্রতি লিটার ভোজ্য তেল মিল পর্যায়ে ১৫৩ টাকা, খাতুনগঞ্জে ট্রেডিং পর্যায়ে ১৫৫ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, রমজানকে সামনে রেখে ভোজ্য তেল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যের অস্থিরতা আমরা দেখতে পাচ্ছি। গতকাল আমরা খাতুনগঞ্জে গিয়ে আমরা দেখেছিল প্রত্যেকটি দোকানে ভোজ্য তেল উধাও হয়ে গেছে। তাই আমরা আজ আমদানিকারক, খাতুনগঞ্জের ট্রেডিং ব্যবসায়ী, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ঠ সকলের সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তের উপনীত হয়েছি যে, প্রতি লিটার সয়াবিন তেল আমদানিকারকরা ১৫৩ টাকায়, খাতুনগঞ্জের ট্রেডার্সরা ১৫৫ টাকায় এবং খুচরা ব্যবসায়ীরা সর্বোচ্চ ১৬০ টাকায় বিক্রি করবেন। এটা আজ থেকে পুরো চট্টগ্রাম জেলায় কার্যকর হবে। এর বাইরে কোন পর্যায়ে ক্উে যদি বেশি দামে বিক্রি করে সেখানে সিটি কর্পোরেশনের টিম থাকবে, জেলা প্রশাসনের টিম থাকবে- তারা সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সাধারণ মানুষকে সুবিধা দেওয়ার জন্য যা যা করার আমাদেরকে অবশ্যই করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাইরে যেসব মুসলিম রাষ্ট্রগুলো রয়েছে বেশির ভাগ দেশে রমজানে সওয়াবের উদ্দেশ্যে কোথাও বিনা মূল্যে আবার কোথাও ভর্তুকি মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করা হয়। আমরা লক্ষ্য করেছি আমাদের দেশে কিছু ব্যবসায়ীর কারসাজির কারণে রাতারাতি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলোর দাম বেড়ে যায়। মেয়র বলেন, আমরা দেখছি প্রতি সেক্টরে এখন অস্থিরতা রয়েছে। সেই অস্থিরতা কমিয়ে আনার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।

নতুন প্রজাতন্ত্র গড়তে গণপরিষদ নির্বাচন ও নতুন সংবিধান প্রয়োজন

নতুন প্রজাতন্ত্র গড়তে গণপরিষদ নির্বাচন ও নতুন সংবিধান প্রয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক :
শুধু সরকার পরিবর্তন করে প্রকৃত গণতন্ত্র বাস্তবায়ন সম্ভব নয় মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, নতুন প্রজাতন্ত্র গড়ার জন্য গণপরিষদ নির্বাচন এবং নতুন সংবিধান প্রয়োজন। পুরনো সংবিধান ও শাসন কাঠামো রেখে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
সদ্য আত্মপ্রকাশ হওয়া রাজনৈতিক দল এনসিপি’র গঠনতন্ত্র প্রণয়নের কাজ চলছে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, দলের নিবন্ধন নিতে শর্তাবলী পূরণ করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মুক্তিযুদ্ধসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করবে জানিয়ে নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক বলেন, বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির ফয়সালা করার জন্য আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাই। এসময় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হান্নান মাসুদসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

 

রোববার থেকে রমজান মাস শুরু 

রোববার থেকে রমজান মাস শুরু 

নিউজ মেট্রো ডেস্ক :

বাংলাদেশের আকাশে আজ ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে । ফলে রোববার (২ মার্চ) থেকে পবিত্র রমজান মাস গণনা করা হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৭ মার্চ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে কদর পালিত হবে।
শনিবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
সভায় ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সকল জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়সমূহ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান হতে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করে উপরোক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) আ. ছালাম খান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নর মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, তথ্য অধিদফতরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামূল কবীর, বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসনের প্রশাসক মো. ফখরুল ইসলাম, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম-সচিব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, ঢাকা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সহকারী পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার অধ্যক্ষ মো. আশরাফুল কবীর, শায়েখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের অধ্যক্ষ মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগামের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ ফারুক, জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়ার উপাধ্যক্ষ আব্দুল গাফফার, দ্বীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক ড. মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাসস

জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ : ১৫১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা

জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ : ১৫১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের’ প্রতিশ্রুতি নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)। শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউর বিশাল সমাবেশ থেকে দলটির ১৫১ সদস্যের কমিটিও ঘোষণা দেওয়া হয়।

নতুন এই রাজনৈতিক দলের আহ্বায়ক করা হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান নায়ক খ্যাত নাহিদ ইসলাম। দলের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য সম্প্রতি অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ ছেড়েছেন তিনি।

আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই ২০২৪-এ ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মাধ্যমে এক অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দেড় দশক ধরে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছে। কিন্তু আমাদেরকে স্মরণ রাখতে হবে, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন স্বাধীনতা কেবল একটি সরকার পতন করে আরেকটি সরকার বসানোর জন্যই ঘটেনি।’ জাতীয় নাগরিক পার্টি হবে একটি গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক ও জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল। রাজনীতিতে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কোনো স্থান হবে না। তিনি বলেন, ‘জনগণ বরং রাষ্ট্রের আষ্টেপৃষ্ঠে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষা থেকে এই অভ্যুত্থানে সাড়া দিয়েছিলো, যেন জনগণের অধিকারভিত্তিক একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠিত হয়। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিচ্ছি।’

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ মো. ইসমাইল হোসেন রাব্বির বোন মিম আক্তার জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নাম ঘোষণা করেন। পরে আংশিক কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন আখতার হোসেন। নতুন এ কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা ও নাহিলা সারওয়ার নিবা, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ (দক্ষিণাঞ্চল) ও সারজিস আলম (উত্তরাঞ্চল), মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী এবং সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে আব্দুল হান্নান মাসউদের নাম ঘোষণা করা হয়।

অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আকবর খান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন্দ ও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের নির্বাহী সভাপতি মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, খেলাফত মজলিসের নেতা আহমেদ আবদুল কাদের, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজী, ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান এ কে এম আজহারুল ইসলাম, এবি পার্টির নেতা দিদারুল আলম ও জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল উপস্থিত ছিলেন।

গণমানুষের নেতা নোমানকে চোখের জলে শেষ বিদায় : জানাযায় মানুষের ঢল

গণমানুষের নেতা নোমানকে চোখের জলে শেষ বিদায় : জানাযায় মানুষের ঢল

নিজস্ব প্রতিবেদক :
আবেগ আর অশ্রæ দিয়ে চট্টগ্রামের গণমানুষের নেতা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানকে শেষ বিদায় জানিয়েছেন দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ। প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো একনজর দেখার জন্য দলীয় সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের ভিড় ছিল দেখার মতো। চট্টগ্রাম শহর ও রাউজানে অনুষ্ঠিত দু’টি জানাযাতেই ঢল নেমেছিল জনতার। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাউজানের গহিরায় পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত হন তিনি।
জানাযার জন্য শুক্রবার জুমার নামাজের আগেই আবদুল্লাহ আল নোমানের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ মাঠে। জুমার নামাজের পর সেখানে জানাযায় মানুষের ঢল নামে। দল মত নির্বিশেষে চট্টগ্রাম নগর ও জেলা থেকে দলে দলে লোকজন ছুটে আসে সেখানে। নগরীর বিভিন্ন মসজিদের জুমার নামাজ শেষ হবার পর জমিয়াতুল ফালাহ অভিমুখে জন¯্রােত সৃষ্টি হয়। জমিয়াতুল ফালাহ ময়দান কানায় কানায় পরিপূর্ণ হবার পর পাশ^বর্তী সড়কে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন হাজার হাজার মানুষ। জানাযায় আগত লোকজনের সুবিধার্থে কাজির দেউড়ি, আলমাস মোড় ও ওয়াসার মোড়ে মাইক লাগানোর ব্যবস্থা করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।
জানাযায় বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা শরীক হন। সেখানের জানাযার পূর্বে আবদুল্লাহ আল নোমানের পুত্র সাঈদ আল নোমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক ও গোলাম আকবর খোন্দকার, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড শাহ আলম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহŸায়ক এরশাদ উল্লাহ, মহানগর জামায়াতের আমির মাওলানা শাহজাহান চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। জানাযা শেষে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
জমিয়তুল ফালাহ’র জানাযা শেষে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জন্মস্থান রাউজানের গহিরায়। সেখানে বাদে আসর গহিরা হাইস্কুল মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
গত মঙ্গলবার ভোর ছয়টায় রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ বাসায় ইন্তেকাল করেন আবদুল্লাহ আল নোমান। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটায় ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে তাঁর মরদেহ চট্টগ্রাম আনা হয়। রাখা হয় কাজির দেউড়িস্থ ভিআইপি টাওয়ারের বাসার পার্কিংয়ে। শুক্রবার সকাল আটটায় নোমানের মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রথমে ভেটেরিনারি বিশ^বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নেওয়া হয় ইস্ট ডেল্টা বিশ^বিদ্যালয়। সকাল ১১টায় নগরীর নুর আহমদ সড়কস্থ নাসিমন ভবনস্থ বিএনপি কার্যালয়ে নেয়া হয় নোমানের মরদেহ। বেলা ১টা পর্যন্ত দলীয় নেতাকর্মীরা সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
একজন সজ্জন রাজনীতিবিদ হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত আবদুল্লাহ আল নোমান একসময় ন্যাপের (ভাসানী) রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের হাত ধরে বিএনপিতে যোগ দেন। দীর্ঘ ১৫ বছর তিনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তাঁকে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়। চট্টগ্রামের রাউজান ও কোতোয়ালি আসন থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বিএনপি সরকারের মন্ত্রিসভায় খাদ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দেন আবদুল্লাহ আল নোমান।