Home অর্থনীতি কন্টেইনার জটের মুখে বেসরকারি আইসিডি

কন্টেইনার জটের মুখে বেসরকারি আইসিডি

0
কন্টেইনার জটের মুখে বেসরকারি আইসিডি

সব ধরনের আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার সরাসরি বেসরকারি আইসিডিতে (ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো) পাঠানো শুরুর পর চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ডে কমতে শুরু করেছে। তবে পর্যাপ্ত ডেলিভারি না হওয়ায় এখন বেসরকারি ডিপোগুলোতে বাড়ছে কন্টেইনারের সংখ্যা। এ অবস্থায় সেখানে কন্টেইনার জট সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) চেয়ারম্যান নুরুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সবগুলো বেসরকারি ডিপোর মোট ধারণক্ষমতা প্রায় ৭৮ হাজার টিইইউস হলেও ইতিমধ্যে সেখানে কন্টেইনারের পরিমাণ ৫৫ হাজার টিইইউস ছাড়িয়ে গেছে। ২৬ জুলাই বন্দর থেকে সব ধরনের আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ডিপোতে পাঠানো শুরু হলেও সে তুলনায় ডেলিভারি হচ্ছে না। তা ছাড়া রপ্তানি পণ্যবাহী ও খালি কন্টেইনারও রয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এ অবস্থায় দ্রুত আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ডেলিভারি ও রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার শিপমেন্ট না হলে ডিপোগুলোতেও কন্টেইনারের বড় জট সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী  বলেন, বেসরকারি আইসিডিগুলো থেকে পণ্য ডেলিভারি পেতে বন্দরের তুলনায় অনেক বেশি সময় লাগছে। খরচও বেড়েছে তিন গুণ। করোনা পরিস্থিতিতে বন্দর জটমুক্ত রাখতে গার্মেন্টস মালিকরা তা সাময়িকভাবে মেনে নিয়েছেন। শিল্প কারখানা বন্ধ থাকার পরও যতটা সম্ভব পণ্য ডেলিভারি নিচ্ছেন তারা। তিনি বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত অফডক থেকে সব আমদানি পণ্য খালাসের কথা বলা হলেও আমাদের অনুরোধ থাকবে সরকারি কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পরপরই যাতে সরাসরি বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। অন্যথায় দেশের প্রধান রপ্তানি খাতের ব্যবসায়ীরা বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, ঈদুল আজহার ছুটির পরদিন থেকেই করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনের কারণে বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি কমে যায় উল্লেখযোগ্য হারে। ফলে কন্টেইনার জট দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে বড় জট এড়াতে সব ধরনের আমদানি পণ্য বেসরকারি ডিপো থেকে খালাসের অনুমতি চেয়ে এনবিআরকে চিঠি দেয় নৌ মন্ত্রণালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ জুলাই সব ধরনের আমদানি পণ্য বেসরকারি ডিপো থেকে খালাসের অনুমতি দিয়ে অফিস আদেশ জারি করে এনবিআর।

রপ্তানি পণ্যবাহী ও খালি কন্টেইনারে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠছে বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোগুলোও। সংকট উত্তরণে বন্দর ও স্টেক হোল্ডারদের জরুরি বৈঠক থেকে চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে চলাচলের জন্য নতুন ফিডার ভ্যাসেল অনুমোদনসহ ৭টি সিদ্ধান্ত হয়। এসব সিদ্ধান্ত কার্যকরের পর অফডকগুলো থেকে কয়েক হাজার রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার জাহাজীকরণ হয়। তারপরও বর্তমানে অফডকগুলোতে ১২ হাজার টিইইউস রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার শিপমেন্টের অপেক্ষায় রয়েছে। তার ওপর নতুন করে সব ধরনের আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার অফডকে আসতে থাকায় সেখানে চাপ বেড়েছে।

বেসরকারি আইসিডিগুলোর গত বুধবারের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চট্টগ্রামের ১৭টি ডিপোতে মোট ৭৮ হাজার ৭০০ টিইইউস কন্টেইনারের ধারণক্ষমতার বিপরীতে মোট কন্টেইনার রয়েছে ৫৫ হাজার ৯৮৮ টিইইউস। এর মধ্যে আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ১৩ হাজার ১১৬ টিইইউস, রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার ১২ হাজার ৬৯৯ টিইইউস ও খালি কন্টেইনার ৩০ হাজার ১৭৩ টিইইউস। স্বাভাবিক অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনায় ধারণক্ষমতার ৩০ শতাংশ খালি রাখতে হয়। কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ অফডকে সেই পরিমাণ জায়গা খালি নেই। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক  জানান, ২৬ জুলাই থেকে সব ধরনের আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার অফডকে পাঠানো শুরুর পর বন্দরে কন্টেইনারের পরিমাণ কমে আসছে। বন্দর থেকে ডেলিভারিও বেড়েছে। বন্দরের ৪৯ হাজার ১৮ টিইইউস ধারণক্ষমতার বিপরীতে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত মোট কন্টেইনার ছিল ৪২ হাজার ৫৮৫ টিইইউস। তিনি জানান, গত তিন দিনে বন্দর থেকে মোট ১৪ হাজার ৯৫ টিইইউস কন্টেইনার ডেলিভারি হয়েছে।

সূত্র: দেশ রূপান্তর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here