Home বন্দর নগরী মশক নিধনে বুধবার থেকে চসিকের মাসব্যাপী বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম

মশক নিধনে বুধবার থেকে চসিকের মাসব্যাপী বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম

0
মশক নিধনে বুধবার থেকে চসিকের মাসব্যাপী বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া সংক্রমণে প্রতিরোধে চট্টগ্রাম মহানগরীতে মশক নিধনে বুধবার থেকে মাসব্যাপী বিশেষ ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। এসময় অত্যাধুনিক মেশিনে মশার ওষুধ ছিটানো হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ২৫জন স্প্রেম্যান ওষুধ ছিটাবেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী মঙ্গলবার এসব তথ্য জানান।

মশক নিধনে ব্যবহৃত ওষুধের কার্যকারিতা নিরুপন ও প্রয়োগ পদ্ধতির  ভিন্নতা নির্ধারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত¡ বিভাগের গবেষণা প্রতিবেদনলব্ধ একটি নতুন ইতিবাচক মাত্রা যুক্ত করেছে বলে মন্তব্য করে সিটি মেয়র বলেন, এর ভিত্তিতে  ৪ আগস্ট থেকে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে মাসব্যাপী  বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম পরিচালিত হবে। প্রতিদিন ৪টি করে মোট ৪১টি ওয়ার্ডে ১০ দিন মশার ওষুধ ছিটানোর পর আবার পুন:কার্যক্রম পরিচালিত হবে। অর্থাৎ প্রতিটি ওয়ার্ডে একমাসে তিনবার ওষুধ ছিটানো হবে। এর বাইরে নিয়মিত কার্যক্রমও চলবে। এভাবে মাসব্যাপী কার্যক্রমে ১০০জন জনবল সম্পৃক্ত থাকবে। একই সাথে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধে সচেতনতা মূলক প্রচার কার্যক্রম চলবে। তিনি জানান, মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য অত্যাধুনিক মেশিন সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কার্যক্রমের সাথে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ১হাজার ৫শত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ২৫জন স্প্রেম্যান ওষুধ ছিটাবেন।

মেয়র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত¡ বিভাগ এর গবেষণালব্ধ প্রতিবেদনকে অত্যন্ত ফলপ্রসু প্রস্তাবনা হিসেবে অভিহিত করে বলেন, গবেষণালব্ধ প্রতিবেদন তৈরীর জন্য চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার কে অনুরোধ জানালে তিনি তাতে সাড়া দিয়ে গুরুত্বের সাথে গবেষণা কর্ম সম্পাদনে সচেষ্ট ছিলেন এবং তাঁর তত্ত্বাবধানে কীটতত্ত্ব বিভাগের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপকগণ যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তা সত্যিই নগরবাসীর জন্য বড় প্রাপ্তি। এ জন্য চবি উপাচার্যসহ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরীতে সংশ্লিষ্ট সকলকে মেয়র ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, মশক নিধনে এ ধরণের বিশেষজ্ঞ প্রতিবেদন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনই এই প্রথম বারের মত পেয়ে সারাদেশে মশক নিধনে দিক নির্দেশনামূলক উপায় অন্বেষণের পথ দেখিয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরিণ আখতার মশক নিধনে চসিকের কার্যক্রমেকে অর্থবহ ও ফলপ্রসু  করতে গবেষণালব্ধ প্রতিবেদন তৈরীর জন্য চবিকে দায়িত্ব দেয়ায় সন্তোষ ও পরিতৃপ্তি জানিয়ে বলেন, এই দায়িত্বটি আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের এবং গর্বেরও। আমরা চেষ্টা করেছি, একটি কার্যকর ও ফলপ্রসু প্রস্তাবনা ও সুপারিশ সমৃদ্ধ গবেষণালব্ধ প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে। এতে মেধা, যোগ্যতা ও সামর্থকে উজার করে দিয়েছি। এতে যদি মশক নিধন সফল হয় আমাদের শ্রম সার্থক হবে। তিনি জানান, প্রতিবেদন তৈরীতে বিশেষজ্ঞ টিম ৯৯টি এলাকা পরিদর্শন করেন। এর মধ্যে ৫৭ টি স্পট থেকে লার্ভা সংগ্রহ করা হয়। এ সংগৃহীত লার্ভার মধ্যে ১৫টি স্পটে লার্ভার শতভাগই ছিলো এডিস, এনাপলিস ছিলো ৩৯টিতে। প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয় যে, ফগার মেশিনের চেয়ে স্প্রে-মেশিনে ওষুধ ছিটানো হলে তার কার্যকারিতা ফলপ্রসূ হবে। তবে ফগার মেশিনে ছিটানো ওষুধের ভিন্নতা আনলে এর কার্যকারিতা পূর্ণতা পাবে। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে প্রাকৃতিক ভাবে মশা প্রজনন প্রতিরোধ সম্ভব। এ ধরণের মাছ লার্ভা খেয়ে বিনাশ করে। এ ছাড়া পুদিনা পাতা, লেবু পাতা, তুলসী পাতা, নিমপাতার, তেজপাতার ঘ্রাণ মশা প্রজনন প্রতিরোধ করে। চবি ভিসি এ প্রসঙ্গে সুপারিশ করেন যে, সিটি কর্পোরেশনের যে সকল আইল্যান্ড আছে সেখানে এ ধরণের উদ্ভিদের চারা রোপন করা হলে মশা নিধন অনেকটা সহজ সাধ্য হবে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শহিদুল আলমের সভাপতিত্বে প্রতিবেদন উপস্থাপন সভায় বক্তব্য রাখেন-বিশেষ অতিথি চবি উপ-উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে, প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, বর্জ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ওয়ার্ড কাউন্সিলর  মো. মোবারক আলী, শৈবাল দাশ সুমন, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, চবি গবেষণা টিমের আহবায়ক সহযোগী অধ্যাপক রবিউল হাসান, ড. মো. ওমর ফারুক, ড. তাপসী বোস, ড. এইচ.এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম প্রমুখ। চবি গবেষণা টিমের আহবায়ক অধ্যঅপক রবিউল হাসান প্রতিবেদনটি প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রেজেন্টেশন করেন।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here