হাইতিতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৩ শতাধিক নিহত
নিউজ মেট্রো ডেস্ক :
ক্যারিবিয় অঞ্চলের দেশ হাইতিতে ৭ দশমিক ২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখনো পর্যন্ত ৩০৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ১৮শ’র মতো মানুষ এতে আহত হয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার সকালের এই ভূমিকম্পে গির্জা ও হোটেলসহ বহু ভবন পুরো ধসে পড়েছে ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী আরিয়েল অঁরি ইতিমধ্যেই হাইতিতে মাসব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
২০১০ সালে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে লাখো মানুষের মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি এখনো পুষিয়ে উঠতে পারেনি দেশটি।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা বলছে, দ্বীপটির সেইন্ট-লুইস দু সাদ শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দুরে ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। ওই অঞ্চলে ৫ দশমিক ১ মাত্রার একটি সহ মোট ছয়টি ‘আফটার-শক’ অনুভূত হয়েছে।
সেখান থেকে ১২৫ কিলোমিটার দুরে রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স এবং প্রতিবেশী কয়েকটি দেশেও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরিয়েল অঁরি মানবিক সহায়তার জন্য দল গঠন করেছেন। তিনি বলেছেন, “এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যতটা সম্ভব ধ্বংসস্তুপের নিচে থেকে জীবিতদের উদ্ধার করা।”
তিনি জানিয়েছে স্থানীয় হাসপাতালগুলো আহতদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। বহু মানুষ সেখানে ভাঙা হাড়গোড় নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হাইতিতে ‘তৎক্ষণাৎ সহায়তা’ অনুমোদন দিয়েছেন। মার্কিন সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি সেখানে ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ যাচাই, নিখোঁজদের খুঁজে বের করা এবং পুনর্গঠনে সহায়তা করবে।
হাইতির লে ন্যুভেলিস্ত সংবাদপত্রের সম্পাদক ফ্রানৎস দুভাল এক টুইট বার্তায় লিখেছেন লে কায় শহরে অন্তত দুটি হোটেল ধসে পড়েছে।
তিনি লিখেছেন, “১৪ অগাস্ট, ২০২১ সকাল সাড়ে আটটার দিকে ধীর, শক্তিশালী এবং দীর্ঘ কয়েক সেকেন্ড জুড়ে কেঁপে উঠেছে হাইতির মাটি।”
সংবাদদাতারা বলছেন লে ন্যুভেলিস্ত শহরের বেশিরভাগ গির্জা ও হোটেল ধসে পড়েছে অথবা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সেখানকার এপিসকোপাল গির্জার প্রধান আবিয়াদে লোজামা নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, “রাস্তা জুড়ে শুধু মানুষের চিৎকার। তারা তাদের প্রিয়জনকে খুঁজছে। পানি ও চিকিৎসা সহায়তা চাইছে।”
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে ভয়াবহ ধ্বংসের চিত্র ফুটে উঠেছে।
হাইতিতে সেভ দা চিলড্রেনের প্রধান লেইলা বুরাহলা বলেছেন, “ক্ষয়ক্ষতি যাচাই করতে বহু দিন লেগে যাবে। কি ধরনের মানবিক সহায়তা এখানে দরকার হবে তা পরিষ্কার।”
সূত্র: বিবিসি
আজ ১৫ আগস্ট : বাঙ্গালির কান্নার দিন
জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি জাতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে দিবসটি পালন করবে। তবে, এবারও বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর কারণে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতপূর্বক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি পালন করা হবে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপদগামী সদস্য ধানমন্ডির বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা , বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধু সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল।
পৃথিবীর এই জঘন্যতম হত্যাকান্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবি ও সুকান্তবাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর দু’কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান।
দেশে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে ও জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে এ মাসের প্রথম দিন থেকেই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করছে।
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন। টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের শ্রদ্ধা নিবেদন। এছাড়াও, দিবসটি উপলক্ষে দেশের সকল মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। জাতীয় দৈনিক ও সাময়িকীতে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও সংস্থা জাতীয় শোক দিবসের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্ব স্ব কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে জাতীয় শোক দিবস পালনের জন্য সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতপূর্বক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে।
মূলত, ‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট থেকেই বাংলাদেশে এক বিপরীত ধারার যাত্রা শুরু করে। বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে সামরিক শাসনের অনাচারি ইতিহাস রচিত হতে থাকে ।
সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নোবেল জয়ী পশ্চিম জার্মানীর নেতা উইলি ব্রানডিট বলেন, মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যে কোন জঘন্য কাজ করতে পারে।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক নীরদ সি চৌধুরী বাঙালিদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি বিশ্বের মানুষের কাছে নিজেদের আত্মঘাতী চরিত্রই তুলে ধরেছে।
দ্য টাইমস অব লন্ডন এর ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট সংখ্যায় উল্লেখ করা হয় ‘সবকিছু সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে সব সময় স্মরণ করা হবে। কারণ, তাঁকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোন অস্তিত্ব নেই। একই দিন লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের লাখ লাখ লোক শেখ মুজিবের জঘন্য হত্যাকান্ডকে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করবে।’
শেখ মুজিবের সুচিন্তা থেকে আজকের বাঙালিরও শেখার আছে উল্লেখ করে ভারতীয় বাঙালী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সম্প্রতি বলেছেন, তাঁকে ‘বাংলাদেশের জনক’ বা বঙ্গবন্ধু বলাটা নিতান্তই কম বলা। তিনি এর চেয়ে বড় কোনও অভিধা এবং নাম কিনতে চাননি। মানুষ তাঁকে অন্তর থেকে ভালবাসতেন।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন রাজনীতির কবি : ড. হাছান মাহমুদ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বহু আগেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি রাজনীতির কবি ছিলেন, বঙ্গবন্ধু জানতেন কখন কোন কথাটি বলতে হয়, তিনি পরিকল্পনা করেছিলেন, প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেটি প্রকাশ করেননি। বঙ্গবন্ধু স্বাধীকার আদায়ের আন্দোলনের মাধ্যমে ৬৬ সালে ছয়দফা ঘোষণা করলেন। ছয়দফার ভিত্তিতে জনমত গঠন করলেন। জনমত গঠন করে মানুষের মনন তৈরী করে তিনি নির্বাচনে গেলেন। নির্বাচনে গিয়ে তিনি প্রমাণ করলেন বাংলার মানুষ তার ছয়দফার পক্ষে আছে। এরপর ধীরে ধীরে বাঙালিকে আরো উদ্বেলিত করে ৭ই মার্চ স্বাধীনতার ডাক দিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চ এমনভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন পাকিস্তানিরা তাকে বিদ্রোহী বলে আখ্যায়িত ও অভিযোগ গঠন করতে পারেনি। তখন পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ঢাকা থেকে রাওয়ালপিন্ডি হেডকোয়ার্টারে রিপোর্ট দিয়েছিল চতুর শেখ মুজিব কার্যত পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু আমাদের দেখে দেখে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কোন কিছুই করার ছিলনা।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির নেতারা ক্রমাগতভাবে বঙ্গবন্ধুর ভুমিকাকে অস্বীকার করে আসছে। তারা একজন খলনায়ককে নায়ক বানানোর অপচেষ্ঠা চালান। জিয়াউর রহমান ছিল কার্যতপক্ষে একজন খুনি ও বিশ্বাসঘাতক। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে তিনি ওৎপ্রোতভাবে যুক্ত ছিলেন। এই খুনির দলের রাজনীতি যারা করেন তারা বঙ্গবন্ধুর ভুমিকাকে অস্বিকার করে।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে যদি সুষ্ঠু রাজনৈতিক ধারা চালু করতে হয় ইতিহাস ও রাজনীতিকে কলুষমুক্ত করতে হয় তাহলে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করা যেমন নিষিদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। একইসাথে যারা বঙ্গবন্ধুর ভুমিকাকে খাটো করে দেখে এবং বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্ঠা চালায় তাদেরও রাজনীতি এদেশে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। একজন খুনি এবং বিশ্বাসঘাতকের পক্ষে যারা রাজনীতি করেন তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকা উচিৎ নয়।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সাধারন সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, মহিউদ্দিন রাশেদ, সম্পাদক মন্ডলির সদস্য আবুল কাশেম চিশতি, নুরুল আনোয়ার চৌধুরী বাহার, ইঞ্জিনিয়ার মেজবাউল আলম লাভলু, ইঞ্জিনিয়ার মো. হারুন, প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, সদস্য ইফতেখার হোসেন বাবুল, উত্তরজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী দিলোয়ারা ইউসুফ প্রমুখ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যদি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা নাহতো তাহলে স্বাধীনতার ১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ হতো একটি উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্র। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর দূর্নীতি আর দুঃশাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশের অগ্রগতির চাকাকে ঘুর্ণায়মাণ চাকায় রূপান্তরিত করে পিছিয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে। এবং অনেক স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আগে আমরা বলতাম ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ রচনা করতে। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে ইতিমধ্যে ক্ষুধাকে আমরা জয় করেছি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গত দেড়টি বছর করোনাকালে বহু মাস-সপ্তাহ লকডাউন ছিল। করোনার শুরুতে কিছু কিছু বুদ্ধিজীবি ও টকশোবিদ যারা রাত বারটার পর টেলিভিশনের পর্দা গরম করেন তাদের অনেকে শঙ্কা-আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল, দেশে হাজার হাজার মানুষ নাখেয়ে মরবে, রাস্তায় লাশ পড়ে থাকবে। তাদের সেই আশঙ্কাকে ভুল প্রমাণিত করেছে জননেত্রী শেখ হাসিনা। আজকে দেড়টি বছর একজন মানুষও অনাহারে মৃত্যুবরণ করেনি এই খেটে খাওয়া মানুষের দেশে।
তিনি বলেন, দেশে এখন কোন খালি পায়ে মানুষ দেখা যায়না, ছেড়া কাপড় পড়া মানুষ খুঁজে পাওয়া যায়না। আকাশ থেকে খুঁড়ে ঘর সহজে দেখা যায়না। এটিই হচ্ছে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এটি কোন যাদুর কারণে হয়নি। শেখ হাসিনার যাদুকরি নেতৃত্বের কারণে এই পরিবর্তন হয়েছে, এটি অনেকের সহ্য হয়না।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি করোনার টিকা নিয়ে কত কুৎসা রটনা ও অপপ্রচার চালাল, পরে আবার নিজেরাই টিকা নিল। বিএনপির নেতারা টিকা নেয়ার ক্ষেত্রে গাধা জল গোলা করে খাওয়ার মতো কাজটাই করেছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন দেশের আশি শতাংশ মানুষকে টিকা দেয়া হবে। বিএনপি মনে করেছিল টিকা আমরা সংগ্রহ করতে পারবোনা। গণটিকা কার্যক্রম যখন শুরু হয়েছে তখন তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
স্মৃতি কথায় ৭৫-এর ১৫ আগস্ট
রেজাউল করিম চৌধুরী :
আগষ্ট। বাঙালি জাতীয় জীবনে অত্যন্ত বেদনা বিদুর, অশ্রু ঝরানো, শোকাবহ মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতি হারিয়েছে তার অমূল্য রতন। বাংলার জনপদে নিরলস ছুটে চলায় যিনি বাঙালি জাতিসত্বাকে মুক্তির মোহনায় উপনীত করেছিলেন, জীবনের শ্রেষ্ট সময়টুকু বাঙালির অধিকার আদায়ের কথা বলতে গিয়ে কারান্তরীন হয়ে কাটিয়েছিলেন, যার তর্জনী হেলনে নিরস্ত্র বাঙালি সশস্ত্র সংগ্রামী ও গেরিলা যোদ্ধা হয়ে ওঠেছিল, এনেছিল স্বাধীনতার লাল সূর্য। সেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে বাঙালির কপালে কালিমা লেপন করে স্বার্থলোভী ও চাকুরিচ্যুত কতিপয় সেনা কর্মকর্তা। তাদের পিছনে কলকাঠি নেড়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার শত্রু দেশী, বিদেশী কুচক্রী মহল। সময়ের পরিক্রমায় সবকিছুই আস্তে আস্তে জাতির কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরপর খন্দকার মোস্তাক স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট ও মেজয় জিয়া সেনা প্রধানের দায়িত্বে এসে তাদের কলুষযুক্ত চেহারা উম্মোচন করে।
১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর খন্দকার মোশতাক আহমেদ বঙ্গবন্ধুর খুনীদের রক্ষায় ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করে। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমান এ অধ্যাদেশকে আইনে পরিনত করে।
দীর্ঘ ২১বছর নানা ছল ছাতুরী, হামলা, মামলা ও নির্যাতন করে আওয়ামী লীগকে জাতীয় রাজনীতিতে কোনঠাসা করে, ইতিহাস বিকৃতি ঘটিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনী ও স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। শত ঝড়, ঝঞ্ঝা বুকে নিয়ে, রোদ, বৃষ্টি গায়ে মেখে, লাঠি, গুলি, টিয়ার গ্যসকে মোকাবেলা করে দীর্ঘ সংগ্রামে পথ বেয়ে জাতির জনকের কন্যা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে এসে ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর সপ্তম জাতীয় সংসদে ইনডেমনিটি আইন বাতিল করে এ নির্মম হত্যাকান্ডের বিচারের অবরুদ্ধ পথ অবমুক্ত করতে সক্ষম হন। এবং স্বাভাবিক বিচারিক প্রক্রিয়ায় ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর ১৫ জনকে বঙ্গবন্ধু ও তার সপরিবারের সদস্যদের হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদন্ড প্রদানের রায় ঘোষিত হয়। ২০০১ সালে বিএনপি জামাত জোট রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলে এ বিচার প্রক্রিয়া আবারো বাধাগ্রস্ত হয়। দীর্ঘ ৩৪ বছরের বহু বাধা বিপত্তি পেরিয়ে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হত্যার ৫ আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য
দিয়ে জাতি তার পিতা হত্যার কলঙ্ক হতে মুক্ত হলেও জাতির জীবন থেকে হারিয়ে গেছে সম্ভাবনার দীর্ঘ সময়টুকু।
১৯৭৫ সালের আগষ্ট মাস। সেদিনের কিছু স্মৃতিকথা আজ আমি নতুন প্রজন্মের জন্য এখানে তুলে ধরতে চাই। ‘বাংলাদেশ জাতীয় সাংস্কৃতিক আন্দোলন’ এর ব্যানারে চট্টগ্রামে আমরা একটি সাংস্কৃতিক সম্মেলনের আয়োজন নিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে ছিলাম। স্থানীয় মুসলিম হলে ১৭আগষ্ট হতে ১৯আগষ্ট তিনদিনব্যাপী এ সম্মেলন হবে ঠিক হল। তপন বৈদ্য ছিলেন এ সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহŸায়ক আর আমি ছিলাম যুগ্ম আহŸায়ক। ভারত ও বাংলাদেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের অনেকেরই এ সম্মেলনে উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছিল। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলুল হক মনি ভাই এ ব্যাপারে আমাদেরকে বিশেষ সহযোগিতা করেছিলেন। কথা ছিল, সম্মেলনের প্রত্যেকদিন একটি করে তিনদিনে মোট তিনটি নাটক মঞ্চস্থ করা হবে। আর, নাটক পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন নাট্যকার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ। জাতীয় সংস্কৃতি ও ক্রীড়ার উন্নয়নে জাতির জনকের জ্যেষ্ট পুত্র শেখ কামাল ছিলেন অন্তপ্রাণ। আমাদের সাংস্কৃতিক সম্মেলনের উদ্বোধক হিসেবে আমরা ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব শেখ কামাল সাহেবকে আমন্ত্রন জানিয়েছিলাম। ১৪ আগষ্ট সন্ধ্যায় আমরা আওয়ামী লীগ নেতা এম এ মান্নান ভাইয়ের বাসায় যাই, তার সাথে আমাদের সম্মেলন প্রস্তুতির নানাদিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি। তিনি আমাদেরকে সম্মেলনের খরচের জন্য ৫০০০টাকা দেন এবং রাতের ট্রেনে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। এরপর আমরা তৎকালীন জেলা প্রশাসক এ.বি. চৌধুরীর সাথে সাক্ষাৎ করি। তিনি আমাদেরকে পরদিন সকালে তার বাসায় যেতে বলেন। সর্বশেষে আমরা তৎকালীন পূর্বদেশ পত্রিকার চট্টগ্রাম প্রতিনিধি নুরুল ইসলাম সাহেবের বাসায় যাই। কাশেম চিশ্তী সাহেবও সেদিন আমাদের সাথে ছিলেন। নুরুল ইসলাম সাহেবের বাসার ল্যান্ড ফোন থেকে আমরা সম্মেলনের উদ্বোধক বঙ্গবন্ধু পুত্র শেখ কামাল সাহেবের সাথে কথা বলি। তিনি ১৭ তারিখে আমাদের সম্মেলনে যথাসময়ে উপস্থিত থেকে উদ্বোধন করার ব্যাপারে আমাদেরকে শতভাগ আশ্বাস প্রদান করেন। নুরুল ইসলাম সাহেবের নন্দনকানস্থ বাসা থেকে বেরিয়ে চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাসে পৌঁছাই যখন, তখন রাত ১টা। বেশকিছু কুকুর একসাথে কান্নার রোল তুলে ডাকছিল। মনটা কেমন যেন মোচর দিয়ে উঠল, কেমন যেন বিষন্নতায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল শরীর মন। তাছাড়া মুরব্বীদের মুখে শুনেছি, কুকুরের কান্না নাকি অশুভ লক্ষন। কিছুক্ষন চুপ থেকে তপন বৈদ্য বলল দেশে কোথায় কোন অঘটন ঘটতে চলেছে কে জানে? কুকুর গুলো এভাবে কান্না করছে কেন? আমি সান্তনা দিয়ে বললাম, ওসব কিছুই না। এগুলো সব মুরব্বীদের বলা কুসংস্কার। তারপর আমরা ঘুমোতে যাই। সকালে ওঠে ডিসি সাহেবের বাসায় যাব এমন সময় লেয়াকত নামের জাসদ সমর্থক এক ছাত্র আমাকে জানাল বঙ্গবন্ধুকে নাকি ভোর বেলায় হত্যা করা হয়েছে। আরেকটু পর আরেক ছাত্রনেতা গোলাম মোহাম্মদও একই কথা বলল। আমি তাদের কথা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। প্যারেড কর্ণারের পূর্বপাশে খালেকের বাসায় গিয়ে তাকে ঘুম থেকে উঠালাম। বললাম, তোমাদের রেডিওটা অন কর। রেডিও অন করতেই খুনিদের ঘোষনা শুনতে পেলাম। তবুও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল, এসব কিছু স্বাধীনতা বিরোধীদের অপপ্রচার। আমরা দ্রæত মতিন বিল্ডিং এর ছাত্রলীগের অফিসে গেলাম। সেখানে ছাত্রলীগ নেতা সরফরাজ খান বাবুল, সন্দ্বীপের রফিকুল ইসলাম, ফটিকছড়ির আনোয়ারুল আজিম, শওকত হোসেন, মান্নান, ইসমাইল, কাশেম চিশ্তী, পটিয়ার এম এ জাফর, শামসুজ্জামানসহ বিশ পঁচিশজন ছাত্রনেতাকে একসাথে পেলাম। তৎক্ষনাত বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কে.সি দে রোড, টি এন্ড টি অফিস, লালদীঘি হয়ে রেয়াজ উদ্দীন বাজার আমতল, তিনপুলের মাথা হতে ঘুরে শহীদ মিনার হয়ে পুনারায় পার্টি অফিসে আসি। কোথাও কোন বাঁধা পাইনি। রাস্তায় তেমন কোন মানুষজন কিংবা পুলিশও ছিলনা। সবদিকে কেমন জানি শুনশান নিরবতা। তপন বৈদ্যর বাসা ছিল ফকির হাট। মিছিলের পর আমরা তার বাসায় যাওয়ার পথে আগ্রাবাদ রেডিও স্টেশনের সামনে নামলাম এবং স্টেশনে ঢুকে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে বক্তব্য রাখার সুযোগ চাইলাম। রেডিও কর্তৃপক্ষ রাজী হলেন না। তারপর তপন বৈদ্যর বাসায় চলে যাই। বাকশাল সাধারন সম্পাদকের সাথে জেলা গভর্ণরদের প্রশিক্ষন কর্মসূচীর জন্য নেতৃবৃন্দের প্রায় সকলেই ঢাকায় ছিলেন। অনেক চেষ্টা করেও কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। ঢাকার সাথে সারাদেশের সমস্ত যোগাযোগ মূলত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিকেলে আমরা আবারো বেরিয়ে পড়ি। মুক্তিযোদ্ধা চেঙ্গিস খানের শ্বশুরের কাজীর দেউড়িস্থ বাড়ীর সামনের রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আমরা কয়জন কথা বলছিলাম। বিকেল পাঁচটার দিকে দেখলাম সামরিক বাহিনীর কিছু গাড়ী রাস্তায় বেরিয়ে পথচারীদের হুমকি, ধমকি দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরী করছে। আমরা রাস্তার পাশ ছেড়ে কিছুটা ভেতরে গলির দিকে ঢুকে পড়লাম। আমাদের মধ্যে কাশেম চিশ্তীর বাসা ছিল চাক্তাই। আমরা সবাই যে যার বাসায় চলে গেলাম।
১৭ আগষ্ট সকালে চট্টগ্রাম কলেজ হোস্টেল থেকে রাউজানের সালাম ও বাবুল আমাদের বহরদার বাড়ীর বাসায় আসে। পরবর্তী করনীয় বিষয়ে আলোচনা করতে ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মী ও কিছু কিছু আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথেও যোগাযোগ করতে লাগলাম।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এস এম ইউসুফ ভাই (মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিব বাহিনীর জেলা প্রধান) আমার বাসায় আসলেন। বললেন, চল বাইরে যাব। মাকে বলে বেরিয়ে পড়লাম (মা অবশ্য বাঁধা দিয়েছিলেন, তবুও) দুজনে। ইউসুফ ভাই আমাকে জামালখানস্থ নজরুলের বাসায় রেখে কোথায় জানি চলে গেলেন। সেই রাতে নজরুলের বাসায় রয়ে গেলাম। সকালে সাতকানিয়ার মুনিরের মারফত ইউসুফ ভাই খবর পাঠালেন। বললেন, তিনি আসবেন। সারাদিন অপেক্ষায় ছিলাম, রাত দশটার দিকে আবারো মনির এসে আমাকে তার সাথে বের হতে বললেন। বললেন, ইউসুফ ভাই আমাদের জন্য অভয় মিত্র ঘাটে অপেক্ষা করছেন। অভয় মিত্র ঘাটের একটি ফিশিং বোটে আনোয়ারুল আজিম, গোলাম রাব্বানী, মো. সেলিম, শওকত হোসেন, রফিক, মনির, কাজী আবু তৈয়ব, মহিউদ্দিন রাশেদ, শামসুজ্জামান, জাফর, দেলোয়ার, মান্নানসহ আমরা ১৪জন ইউসুফ ভাইয়ের সাথে বসলাম। ইউসুফ ভাই বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে করনীয় সম্পর্কে আমাদের উদ্দেশ্যে দীর্ঘক্ষণ বক্তব্য রাখেন এবং যার যা কিছু আছে তা নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহŸান জানান। এ বৈঠকের ঠিক পনের দিন পর আমরা নিউ মার্কেট মোড়, আগ্রাবাদ, কাজীর দেউরীসহ চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি জায়গায় গ্রেনেড চার্জ করি। এরপর ইউসুফ ভাইসহ কাজী আবু তৈয়ব ও আমি আমাদের নেতা মান্নান ভাইয়ের বাসায় যাই। শক্তি সংগ্রহের জন্য ভারতে যাওয়ার ব্যাপারে মান্নান ভাইকে বুঝিয়ে বলি। মান্নান ভাই এতে রাজী হলেন না। কিন্তু ইউসুফ ভাই ঠিকই ভারতে চলে গেলেন। এদিকে কঠোর বিধি নিষেধের যাঁতাকলে পড়ে কোথাও জড়ো হওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ল। তখন নিউমার্কেটে নজরুলের শাহ আমান স্টোর হয়ে উঠল আমাদের যোগাযোগের অন্যতম ক্ষেত্র। এখানে আমরা ক্রেতাবেশে আসতাম এবং পরস্পরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতাম। একসময় সিদ্ধান্ত নিলাম, আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে লিফলেট ছাপিয়ে বিতরন করব। ছাপানোর দায়িত্ব ছিল ফটিকছড়ির এস এম ফারুকের উপর। যথারীতি লিফলেট ছাপানো হল, বিভিন্ন জায়গায় বিতরন করা হল। এভাবে বিক্ষিপ্তভাবে আমরা প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ সংগ্রাম চালিয়ে যেতে থাকলাম। নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ আমরা জানতে পারলাম, জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজ উদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও কামরুজ্জামানকে কারাগারের ভেতর ঢুকে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করা হয়েছে। সেদিন মুক্তি যোদ্ধা নুরুল বশর ও আমি আমাদের বহরদার বাড়ীর বাসা থেকে বেরিয়ে কাজেম আলী স্কুলের সামনে দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে লিয়াকত (পরবর্তীতে কমিশনার) ও আওয়ামী লীগ কর্মী ফোরক আহমদের সাথে দেখা হয়। ৪ জন মিলে আলাপ করলাম কি করা যায়! লিয়াকত বলল, চল আমরা চট্টগ্রাম কলেজ গিয়ে প্রতিবাদী মিছিল বের করি। যদিও আমি সভাপতি নির্বাচিত হই ১৯৭২ সালে, সম্মেলন না হওয়ায় তখনো আমি চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্বে আছি। আমরা কয়েকজন দ্রæত কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়লাম আর গ্যালারী ২ তে গিয়ে বললাম ক্লাস হবেনা। শিক্ষক আবু তাহের সাহেব তা মানতে রাজী হলেন না। লিয়াকত ক্যাম্পাসের এদিক সেদিক ছুটোছুটি শুরু করেছে, একজন ছাত্র ক্লাস থেকে বেরিয়ে গিয়ে আয়নায় সজোড়ে একটি পাথর ছুঁড়ে মারল। বিকট আওয়াজ আর কাঁচ ভাঙ্গার শব্দ শুনে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা দিগ্বিদিক ছুটতে আড়ম্ভ করল। তারপর, প্রতিবাদী ছাত্রদের নিয়ে আমরা মিছিল বের করি এবং মহসীন কলেজ, কাজেম আলী স্কুল ও খাস্তগীর স্কুলের ক্লাশ বন্ধ করে দিই। এরপর মিছিল নিয়ে আন্দরকিল্লা, নজির আহমদ সড়ক, রাইফেল ক্লাব হয়ে শহীদ মিনারে দিকে ঘুরতেই নিউমার্কেটের ঐদিক থেকে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর কয়েকটি গাড়ী এসে আমাদের উপর হামলে পড়ে। মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তৎকালীন গ্র্যান্ড হোটেলের গলিতে ঢুকে যাওয়ার পরও দেখি পুলিশ আমার পিছু ছাড়েনি। পাশ্ববর্তী একটি ভবনের সীমানা প্রাচীর টপকে আমি কোন প্রকারে গ্রেপ্তার এড়াতে সক্ষম হলেও অনেকেই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। রাঙ্গুনিয়ার এমপি মরহুম ক্যাপ্টেন কাশেম সাহেবের একান্ত সহাযোগিতায় পরের দিনই তারা ছাড়া পান। সেদিন বিকেলেই ইউনাইটেড হোটেলের সামনে সিটি কলেজের ছাত্রনেতা জানে আলমের সাথে আমাদের দেখা হয়। হোটেলের কাছেই জানে আলমের বাসা। হোটেল মালিকের শ্যালক যখন বললেন, কক্সবাজারের গোলাম রাব্বান ভাই হোটেলে আছেন তখন আমরা হোটেলের এক কোনার গোপন আস্তানায় তার সাথে দেখা করলাম। তিনি বললেন, আমরা সন্ধ্যায় মশাল মিছিল বের করব তোমরা দ্রæত প্রস্তুতি নাও। চট্টগ্রাম কলেজের হোস্টেলে এসে বেয়ারা বশরকে ৫০টাকা দিয়ে বাঁশ, চট ও কেরোসিন আনতে পাঠালাম। কিছু পরে হোস্টেলের আরেক বেয়ারা চিত্ত এসে বলল মশালের সরঞ্জামসহ বশর পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। আমাদের মশাল মিছিলের পরিকল্পনা এখানে ব্যর্থ হল। এরপর রাব্বান ভাইসহ আমরা পরেরদিন হরতাল কর্মসূচী ঘোষনার সিদ্ধান্ত নিলাম। ফেনীর গোলাম মোস্তফার সাথে যোগাযোগ করলাম। তার একটা ছাপখানা ছিল, এখান থেকে হরতালের সমর্থনে লিফলেট ছাপানো হল। সারা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঐ লিফলেট বিতরন করা হল। মুত্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল বশর ও আমি বহরদার হাট, মুরাদপুর, চকবাজার, পাঁচলাইশ ও চান্দগাঁও এলাকার দায়িত্ব নিয়ে লিফলেট বিতরন করি। হরতাল হয়নি, পরিবেশ পরিস্থিতি আমাদের অনুকুলে ছিলনা সেটাতো বুঝতেই পারছেন। আমরা বিচ্ছিন্ন কর্মসূচী দিয়ে সরকার ও প্রশাসনকে আস্তে আস্তে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছিলাম মাত্র। এভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, মহানগরীর বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডে প্রতিবাদী কর্মসূচী দিয়ে তৎপরতা চালিয়ে যাই। সেদিনের কথা মনে হলে হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ হয়। রাতারাতি সবকিছু যেন বদলে গিয়েছিল তখন। চেনা মানুষগুলোর অনেকেই যেন অচেনা হয়ে গেল। বঙ্গবন্ধু থাকাকালীন সময়ে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা লোকগুলো, যাদের সাথে আমাদেরও বেশ সখ্যতা ছিল, আজ তার রঙ বদলে নিয়েছে গিরগিটির মত। তাদের কাছে গেলে তারা আমাদের দুর দুর করে তাড়িয়ে দিতে লাগল। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নানান কটুক্তি করতেও ছাড়েনি তারা। তাদের এই কটু আচরন, স্বৈরাচার ও স্বাধীনতা বিরুধী অপশক্তি এবং সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাসহ জাতীয় চারনেতা হত্যাকান্ডের বেনিফিশিয়ারী গোষ্ঠীর অত্যাচার, নিপীড়ন, প্রলোভনকে পদদলিত করে জীবনবাজী রেখে আমরা মুজিবপ্রেমী জনগন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম করে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে ন্যাস্ত করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু, বর্ণচোরা গিরগিটির দল আবারো আওয়ামী লীগ ও রাষ্ট্র ক্ষমতার নানান স্তরে জেঁকে বসেছে। নিজেদের প্রভাব বলয়ের বিস্তার ঘটাতে প্রগতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে অবস্থানকারী স্বাধীনতা বিরোধীদেরকেও মুজিবাদর্শের সৈনিক আখ্যা দিয়ে প্রকৃত মুজিপ্রেমীদের কোনঠাসা করে রাখায় অপপ্রয়াসে লিপ্ত।
তারা আজ ভাবতে শুরু করেছে সংগঠনে তারাই শক্তিশালী। তাই, তারা অসম্ভব রকমের বেপরোয়া। এদের আস্ফালন ও বেপরোয়া আচরনে অতিষ্ট হয়ে প্রকৃত আওয়ামী লীগের অনুসারীরা রাজনীতি কর্মকান্ডের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। তাদের অভিমানী মন আজ রাজনীতি বিমূখ। এর থেকে ফায়দা লুটছে সুবিধাবাদীরা, তারা ক্ষমতার সুযোগে দিনের পর দিন অঢেল বিত্ত বৈভবের মালিক হচ্ছে। আর এই অর্থের দাপটে আদর্শিক কর্মীরা আজ ক্ষত বিক্ষত।
তাই শোকের মাসে ডাক দিয়ে যাই আসুন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকেরা। আর হতাশা নয়, অভিমান নয়। সুবিধা বাদীদের হটিয়ে, তাদের সকল চক্রান্তকে পদদলিত করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ঝান্ডা উড়াই। মনে রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধুর রক্তের কাছে আমরা ঋনী। আমরা দায়বদ্ধ আমাদের অস্তিত্বের প্রতীক, ইতিহাসের শ্রেষ্ট সন্তান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋনের কাছে। আসুন জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন অভিযাত্রাকে কন্টক মুক্ত করতে ও জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী রাখতে কাজ করে যাই।
সকলকে ধন্যবাদ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয়তু জননেত্রী শেখ হাসিনা।
লেখক : মেয়র
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জ্যেষ্ট যুগ্ম সাধারন সম্পাদক
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনার বুস্টার ডোজের অনুমোদন
নিউজমেট্রো ডেস্ক :
করোনা টিকার বুস্টার ডোজের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের এই বুস্টার বা তৃতীয় ডোজ দেওয়া যাবে। খবর রয়টার্সের।
রয়টার্স জানায়, বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) জানিয়েছে, দেশে করোনার নতুন ঢেউ শুরু হয়েছে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তাই বুস্টার ডোজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এফডিএ’র ঘোষণায় স্বস্তি পেয়েছেন অনেকেই। যাদের অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়েছে বা ক্যানসার আক্রান্ত কিংবা জটিল কোনও রোগে আক্রান্ত তাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। তাদের অতিরিক্ত সুরক্ষা দেবে এই বুস্টার ডোজ। ইতিমধ্যেই ফ্রান্স ও ইসরাইল এর অনুমোদন দিয়েছে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।
টানা ১৯দিন পর করোনায় ২শ’র নিচে মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক : একটানা উনিশ দিন পর দেশে করোনায় একদিনে মৃত্যুর সংখ্যা ২শ’র নিচে নেমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মারা গেছেন ১৯৭ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ৮১০ জনে।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৮ হাজার ৪৬৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ লাখ ৫ হাজার ৩৩৩ জনে।
স্বাস্থ্য অঅধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ হাজার ৬৬১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এদিন করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৪৫৭ জন। তাদের নিয়ে দেশে করোনাতে আক্রান্ত হয়ে মোট সুস্থ হলেন ১২ লাখ ৭৩ হাজার ৫২২ জন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার ২১৫, বুধবার ২৩৭, মঙ্গলবার ২৬৪, সোমবার ২৪৫, রোববার ২৪১, শনিবার ২৬১ ও শুক্রবার ২৪৮ জনের মৃত্যু হয়। গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। এদিন মৃত্যু হয় ২০১ জনের। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই করোনায় দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগ্রহীত হয়েছে ৪১ হাজার ৭৫১টি আর নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪০ হাজার ৬৪১টি। দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮৩ লাখ ৪২ হাজার ১৯০টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ৬১ লাখ ৬৮ হাজার ৮৪৬টি আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা হয়েছে ২১ লাখ ৭৩ হাজার ৩৪৪টি।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, মারা যাওয়া ১৯৭ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের আছেন ৭৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৫৩ জন, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের আটজন করে, খুলনা বিভাগের ১৮ জন, বরিশাল বিভাগের ১১ জন, রংপুর বিভাগের নয়জন আর ময়মনসিংহ বিভাগের আছেন ১২ জন। মারা যাওয়া ১৯৭ জনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৫৬ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৩২ জন আর বাড়িতে মারা গেছেন নয়জন।
অষ্ট্রেলিয়ার বিরূদ্ধে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪-১ ম্যাচের ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া দলকে ৬০ রানে হারিয়ে দেয় টাইগাররা।১২৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে মাত্র ৬২ রানেই অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১২২ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে নামেন মোহাম্মদ নাইম শেখ ও মেহেদী হাসান। দু’জনে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন। প্রথম চার ওভারেই দলীয় রান ৪০ পার হয়ে হয়ে যায়। ৪.৩ ওভারে দলীয় ৪৩ রানের মাথায় অ্যাশটন টার্নারের বলে অ্যাগারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ১৩ রান করে ফিরে যান মেহেদী হাসান। এর পর সাকিব খেলেতে নেমে দলীয় ৬০ রানের মাথায় ২০ বলে ১১ রান করে আউট হয়ে যান । তার আগে ২৩ বলে ২৩ রান করে আউট হন অপর ওপেনার নাইম শেখ। এরপর ক্রিজে আসেন সৌম্য সরকার। কিন্তু ব্যাটিং পজিশন পরিবর্তন হলেও তার ফর্ম আগের মতো রয়ে যায়। ১৬ রান করে আউট হয়ে যান। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১৯ ও আফিফ হোসেন ১০ করেন।
এদিন অস্ট্রেলিয়ার বিরূদ্ধে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান।৩.৪ ওভারের মধ্যে একটি মেডেনও দিয়েছেন। এটিই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন মাত্র ৩ ওভার বোলিং করে ১২ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। দারুণ বোলিং করেছেন নাসুম আহমেদ ও মেহেদী হাসানও। এর মধ্যে নাসুম নিয়েছেন অজিদের প্রথম দুটি উইকেট। তবে উইকেট না পেলেও নিয়ন্ত্রিত ছিলেন মেহেদী। অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও নেন একটি উইকেট।
অজি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২২ রান করেন অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। এছাড়া ১৭ রান করেন বেন ম্যাকডারমট। বাকিদের মধ্যে আর কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি।