Home Blog Page 47

নির্বাচনে খুনি ও আগুণ সন্ত্রাসীদের সমুচিত জবাব দিন : রেজাউল

নির্বাচনে খুনি ও আগুণ সন্ত্রাসীদের সমুচিত জবাব দিন : রেজাউল

নিউজ মেট্রো ডেস্ক :
আগামী ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে খুনি, বোমাবাজ ও আগুণ সন্ত্রাসীদের সমুচিত জবাব দেয়ার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহŸান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এম. রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা লুটপাটের অর্থ নিয়ে বিদেশে বসে দেশীয় দোসরদের দিয়ে আন্দোলনের কথা বলে। আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারা, দেশের সম্পদ বিনষ্ট করা এ দেশের মানুষ আর সহ্য করবেনা।
রবিবার বিকেলে নগরীর উত্তর কাট্টলী, উত্তর পাহাড়তলী ও সরাইপাড়া ওয়ার্ডে গণসংযোগকালে বিভিন্ন পথসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, মাহফুজুল হায়দার রোটন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, নুরুল আবছার মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পথসভায় রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বীর চট্টলার মানুষ সর্বাগ্রে রুখে দাঁড়িয়েছে। মেয়র নির্বাচিত হয়ে আমি একটি সা¤প্রদায়িকতা মুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, মাদকমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, পরিবেশ বান্ধব, পর্যটক বান্ধব, বাণিজ্য অনুকুল, স্বাস্থ্যকর, নান্দনিক ও স্মার্ট চট্টগ্রাম সিটি গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।

 

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা চালকের আসনে আছি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা চালকের আসনে আছি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিউজ মেট্রো প্রতিনিধি :
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার চালকের আসনে রয়েছে বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জটিলতা বাড়ছে। বাংলাদেশ সরকার তাদের ফেরত পাঠানোর সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের পাল্লা ভারি হচ্ছে।
রবিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলামের দুটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রসেফর ড. শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান আসবে বলে আশা প্রকাশ করে এ কে আবদুল মোমেন বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরানোর বিষয়টি আমরা আন্তর্জাতিক ফোরামেও নিয়েছি। ইতোমধ্যে ১৩২টি দেশ আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। সম্প্রতি জাপানও আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন। মিয়ানমারের অনেক শ্রমিক জাপানে আছে। তারাও উদ্যোগ নিয়েছে, মিয়ানমারকে বোঝানোর।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। তাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তারা কখনও বলেনি, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে না। কিন্তু আজ প্রায় সাড়ে ৩ বছরে একজন রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি। অথচ ১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালে দেখেছি, তখন অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছিল আবার নিয়েও গেছে। ১৯৯২ সালে প্রায় ২ লাখ ৫৩ হাজার রোহিঙ্গা আমাদের দেশে আসে। পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে তারা ২ লাখ ৩০ হাজার জন রোহিঙ্গাকে ফেরত নিয়ে যায়।
মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলামের লেখা বই প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কথা বলতে হলে রেফারেন্সের প্রয়োজন হয়। কারণ অনেকে মনে করে রোহিঙ্গারা চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে যাওয়া। তাই মেজর (অব.) এমদাদের এই বই দু’টিকে আমরা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করতে পারবো। এখানে বারশ বছর আগের ইতিহাসও লিপিবদ্ধ হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এসময় ‘রোহিঙ্গা-নিঃসঙ্গ নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠী ও শেষ সীমান্তের পর কোথায় যাব আমরা’ শীর্ষক বই দু’টির মোড়ক উন্মোচন করেন।

 

দ: এশিয়ার ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হবে বাংলাদেশ : তুর্কি রাষ্ট্রদূত

দ: এশিয়ার ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হবে বাংলাদেশ : তুর্কি রাষ্ট্রদূত

নিউজ মেট্রো প্রতিনিধি :
তিনি চট্টগ্রাম বন্দর ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে আগামী বিশ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তুরান। তিনি বলেন, করোনাকালীন পরিস্থিতিতে সমগ্র বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে তখন বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল উল্লেখযোগ্য যা অন্যান্য দেশ থেকে এদেশকে আলাদা করেছে।
রোববার সকালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ কার্যালয়ে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি মাহবুবুল আলম’র সাথে মত বিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় চেম্বার পরিচালক ও তুরস্কের অনারারী কনস্যুল জেনারেল সালাহ্উদ্দীন কাসেম খান, চেম্বার পরিচালক মো. জহুরুল আলম, অঞ্জন শেখর দাশ, বেনাজির চৌধুরী নিশান, মো. আবদুল মান্নান সোহেল, মো. এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর ও তাজমীম মোস্তফা চৌধুরীসহ দূতাবাসের সেকেন্ড সেক্রেটারী গাইজেম আয়দিন এরদেম ও কমার্শিয়াল কাউন্সিলর কেনান কালাইছি উপস্থিত ছিলেন।
তুর্কি রাষ্ট্রদূত বলেন, সম্প্রতি ঢাকা এবং আংকারায় দু’দেশের নতুন দূতাবাস নির্মাণ পারস্পরিক সম্পর্কে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনের ইঙ্গিত প্রদান করছে। তাই তুর্কি রাষ্ট্রপতির সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফরে বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরী করা অধিক প্রাধান্য পেতে যাচ্ছে। একই সাথে পারস্পরিক বাণিজ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি (এফবিসিসিআই)’র দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনলাইন বিটুবি সভা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তিনি উক্ত বিটুবি সভায় অংশগ্রহণের জন্য চিটাগাং চেম্বারকে আহবান জানান।
রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রামে তুর্কির এলপিজি প্রতিষ্ঠান ‘এ্যাইগ্যাজ’ ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে উল্লেখ করে একটি হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনার কথাও জানান। এক্ষেত্রে তিনি চিটাগাং চেম্বারের সার্বিক সহায়তা কামনা করেন। এছাড়া চেম্বার কর্তৃক আয়োজিত চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় পার্টনার কান্ট্রি হিসেবে অংশগ্রহণে তুরস্কের আগ্রহের কথা উল্লেখ করেন।

মত বিনিময়কালে চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন-বাংলাদেশ ও তুর্কির মধ্যে ব্যবসায়িক সম্ভাবনার আরও সদ্ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানের দুই বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য লক্ষ্যমাত্রাকে আমরা স্বাগত জানাই। এক্ষেত্রে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত প্রণোদনা কাজে লাগিয়ে তুর্কি ব্যবসায়ীরা মিরসরাইসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে পারে। উভয় দেশের মধ্যে পিটিএ স্বাক্ষর হলে তা শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূর করে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। চেম্বার সভাপতি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে সফরকালে তুর্কি প্রেসিডেন্টকে চট্টগ্রাম ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান। উভয় দেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগে একটি দশ বছর মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য অনুরোধ করেন মাহবুবুল আলম।

নির্বাচনী প্রচারণায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই : ডা. শাহাদাত

নির্বাচনী প্রচারণায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই : ডা. শাহাদাত

নিউজ মেট্রো ডেস্ক :
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণার ক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই অভিযোগ করে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, সব প্রার্থীর জন্য নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকার কথা ছিল। অথচ দেখা যাচ্ছে সরকারী দলের প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণায় পুলিশ সার্পোট ও প্রশাসনিক সুবিধা পাচ্ছেন। প্রতিদিন ৩০/৩৫টি গাড়ীর বহর নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। এটাকে কি লেভেল প্লেয়িং বলা যায়?
তিনি বলেন, তারপরও আমরা চাই একটি সুন্দর, সুষ্ঠু ভোট হোক। তারা যদি এসব অনিয়ম করে তাহলে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে অনিহা সৃষ্টি হবে। মানুষের মধ্যে ভয়ভীতির সঞ্চার হবে। তাই নির্বাচন কমিশনার ও প্রশাসনের দায়িত্ব ভোটারদের কেন্দ্রে যাবার পরিবেশ সৃষ্টি করার।
রবিবার দুপুরে নগরীর পাঁচলাইশ ৩ নং ওয়ার্ড এলাকায় গণসংযোগকালে এসব কথা বলেন। নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে আতুরার ডিপু নুর টাওয়ারের সামনে থেকে গণসংযোগ শুরু করে তুলা কোম্পানি, ঈদগাঁ মোড়, চালিতাতলী বাজার, বোর্ড অফিস, নেজামে হামচা, অক্সিজেন কুয়াইশ সংযোগ সড়ক, ওয়াজেদিয়া, হরিপুর, নয়াহাট, ফকিরাবাদ, কয়লারঘর, অক্সিজেন, পাঠানপুর,শহীদ নগর হয়ে বেলতল মোড়ে এক পথসভায় বক্তব্য রাখেন। গণসংযোগ কালে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে সালাম বিনিময় এবং ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করেন।
ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, চট্টগ্রামের মানুষ সবসময় সংগ্রামী এবং প্রতিবাদী। তাই চট্টগ্রামের বিভিন্ন সমস্যা, অনিয়ম দ্রব্যমূল্যের যে উর্ধ্বগতি এবং চট্টগ্রামের প্রতি যে অবহেলা তার জবাব দিতে ২৭ জানুয়ারী চট্টগ্রামের মানুষ স্বত:স্ফুর্তভাবে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ধানের শীষ প্রতিকে তাদের রায় দেবেন।
তিনি আগামীতে চট্টগ্রামকে একটি পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর ৪১ ওয়ার্ডে আরবান হেল্থ সেন্টারগুলো চালু করতে পারলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপর কিছুটা হলেও চাপ কমতো। তাই আরবান হেল্থ সেন্টার, চাইল্ড কেয়ারগুলো বাড়ানোর পরিকল্পনা নিতে হবে। নির্বাচিত হলে একটি স্পেশালিষ্ট হেলদি স্মার্ট সিটি গড়ে তোলার জন্য কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
গণসংযোগ কালে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কও, চট্টগ্রাম ০৮ আসনের সাবেক বিএনপি প্রার্থী ও মহানগর বিএনপির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, নগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, সদস্য ইকবাল চৌধুরী, এস এম আবুল ফয়েজ, আর ইউ চৌধুরী শাহীন,মনজুর আলম চৌধুরী মনজু, কামরুল ইসলাম, নগর বিএনপির সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম, জি এম আইয়ুব খাঁন, বায়েজিদ থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল্লাহ আল হারুন, নগর বিএনপির সবেক সহ দপ্তর সম্পাদক মো: ইদ্রিস আলী, বায়েজিদ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের জসিম, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।###

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: আত্মপ্রত্যয়ী অদম্য বিশ্বনেতা শেখ মুজিব

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: আত্মপ্রত্যয়ী অদম্য বিশ্বনেতা শেখ মুজিব

খায়রুল আলম

একজন শেখ মুজিব, পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ক্ষণজন্মা নেতা খুব কমই জন্মে। যিনি নিজের দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করেন না। ইতিহাসের দিকে তাকালে এমন নেতা বিরল। আমাদের জাতির পিতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের জীবন বাজি রেখে বাঙালি জাতির জন্য স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সেই দিনগুলোতে তাকে কাটাতে হয়েছে পাকিস্তানি কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে।

আর তাইতো ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালি জাতির স্বাধীনতা অর্জন করলেও প্রকৃত মুক্তির স্বাদ পেয়েছিল ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। কারণ সেদিন বাংলার মাটিতে পা রেখেছিলেন বাঙালির মুক্তির মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

‘যে মাটিকে আমি এত ভালবাসি, যে মানুষকে আমি এত ভালবাসি, যে জাতিকে আমি এত ভালবাসি, আমি জানতাম না সে বাংলায় আমি যেতে পারবো কি-না। আজ আমি বাংলায় ফিরে এসেছি বাংলার ভাইয়েদের কাছে, মায়েদের কাছে, বোনদের কাছে। বাংলা আমার স্বাধীন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন।’ দেশে ফিরে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি এভাবেই আবেগতাড়িত ভাষণ দিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে। জাতির পিতা পাকিস্তান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে ইংরেজি হিসাবে ৮ জানুয়ারি। এদিন বঙ্গবন্ধু ও ড. কামাল হোসেনকে বিমানে তুলে দেয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তারা পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে।

বেলা ১০টার পর থেকে তিনি কথা বলেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। পরে ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন।

এর আগে ইথারে ভেসে আসে- তার মুক্তির খবর, দেশে ফেরার বার্তা। মুহূর্তেই আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে বার্তাটি ছড়িয়ে পড়ে। চাতক পাখির মতো অপেক্ষমাণ সাত কোটি বাঙালি মেতে ওঠেন বাঁধভাঙা আনন্দে।

দশ তারিখ সকালেই তিনি নামেন দিল্লিতে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভি ভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রীসভা, প্রধান নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সে দেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশের জনক শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ভারতের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের কাছে তাদের অকৃপণ সাহায্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসেবে।’

বঙ্গবন্ধু ঢাকা এসে পৌঁছেন ১০ জানুয়ারি। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের পর বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য প্রাণবন্ত অপেক্ষায় ছিল। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকাল পাঁচটায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন। পরের দিন দৈনিক ইত্তেফাক, সংবাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে এভাবেই লিখা হয়- ‘স্বদেশের মাটি ছুঁয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের নির্মাতা শিশুর মতো আবেগে আকুল হলেন। আনন্দ-বেদনার অশ্রুধারা নামলো তার দু’চোখ বেয়ে। প্রিয় নেতাকে ফিরে পেয়ে সেদিন সাড়ে সাত কোটি বাঙালি আনন্দাশ্রুতে সিক্ত হয়ে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তোলে বাংলার আকাশ বাতাস।

জনগণ-মন-নন্দিত শেখ মুজিব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে তার ঐতিহাসিক ধ্রুপদী বক্তৃতায় বলেন, ‘যে মাটিকে আমি এত ভালবাসি, যে মানুষকে আমি এত ভালবাসি, যে জাতিকে আমি এত ভালবাসি, আমি জানতাম না সে বাংলায় আমি যেতে পারবো কি-না। আজ আমি বাংলায় ফিরে এসেছি বাংলার ভাইদের কাছে, মায়েদের কাছে, বোনদের কাছে। বাংলা আমার স্বাধীন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন।’ সশ্রদ্ধ চিত্তে তিনি সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন, সবাইকে দেশ গড়ার কাজে উদ্বুদ্ধ করেন।

লাখো জনতার জনসমুদ্র পাড়ি দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স) দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু তার বক্তব্যে বলেছিলেন, বাঙালি আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে সেই বাঙালির জন্য আমি রক্ত দিতেও প্রস্তুত।

পাকিস্তানের শাসন-শোষণ ও অত্যাচার-নির্যাতনের হাত থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে জীবনের একটা বড় সময় শেখ মুজিবকে বার বার জেল, জুলুম ও অত্যাচার-নির্যাতন ভোগ করতে হয়। পাকিস্তান ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে গড়ে উঠা বাঙালির সব আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়েই শেখ মুজিবুর রহমান হয়ে ওঠেন জাতির অবিসংবাদিত নেতা এবং ভূষিত হন বঙ্গবন্ধু উপাধিতে।

আন্দোলন-সংগ্রামের চূড়ান্ত পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন। ২৫ মার্চ কাল রাতে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে গণহত্যা চালাতে শুরু করে। এ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এর পর পরই বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

শুরু হয় বাঙালির সশন্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলতে থাকে। এ সময় বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি রেখে তার উপর নির্যাতন চালানো হয়। পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার নানা পরিকল্পনা তৈরি করে। জেলের মধ্যে অত্যাচার নির্যাতনই শুধু নয়, তাকে ফাঁসির মঞ্চেও নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দেশে-বিদেশে বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা ও তার অদম্য সাহসের কাছে শেষ পর্যন্ত হারমানে পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী এবং সেনাবাহিনী।

এদিকে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতেই বাঙালি জাতি বঙ্গন্ধুর আদর্শে ও নির্দেশিত পথে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চালিয়ে যায়। যতোদিন যেতে থাকে যত রক্ত ঝরতে থাকে, স্বদেশের মাটিকে হানাদার মুক্ত করতে বাঙালি ততোই মরিয়া হয়ে উঠে। মুক্তিবাহিনী এবং মিত্রবাহিনীর যৌথ প্রতিরোধের মুখে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি বিজয় অর্জন করেন। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ হন ও ৩ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারান। এতো রক্ত ও প্রাণের বিনিময়ে বিজয় এলেও মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকায় বাঙালির অর্জিত বিজয় পূর্ণতা পায়নি। বিজয়ী বাঙালি জাতি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে তাদের নেতার ফিরে আসার।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর বিশ্বব্যাপী বঙ্গবন্ধু জনপ্রিয়তা আরও বাড়তে থাকে। বাঙালির পাশাপাশি বিশ্বের স্বাধীনতা ও শান্তিকামি মানুষও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠে।

আন্তর্জাতিক চাপের কাছে নতিস্বীকার করে অবশেষে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু সোজা লন্ডন চলে যান। সেখান থেকে ভারত হয়ে ১০ জানুয়ারি স্বদেশে ফেরেন। সেদিন সারা দেশ থেকে মানুষ ছুটে আসেন তাদের নেতাকে একবার দেখার জন্য। স্বাধীন দেশে ফিরে বাঙালির ভালবাসায় সিক্ত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

লন্ডন থেকে দিল্লিতে ফিরে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দিল্লিতে আয়োজিত সংবর্ধনা মঞ্চে প্রথমেই বক্তব্য দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তিনি তার ভাষণ শেষ করলেন৷ জনতা ফেটে পড়ল৷ মাইকের সামনে তখন দীর্ঘদেহী মুজিবুর রহমান৷ তিনি এবার ইংরাজিতে বক্তব্য শুরু করলেন- ‘প্রাইম মিনিস্টার শ্রীমতি গান্ধী, লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান প্রেজেন্ট’, এরপরেই জনতার প্রবল দাবি-‘বাংলা বাংলা’৷ একটু থেমে গেলেন বঙ্গবন্ধু৷ পাশ থেকে ইন্দিরা মুচকি হেসে জানিয়ে দিলেন ‘বেঙ্গলি বেঙ্গলি’৷ হাসি খেলে গেল শেখ মুজিবের মুখে৷ নিজের দেশ-বাংলাদেশের তরফে স্বাধীনতার শুভেচ্ছা দিয়েই আপামর ভারতবাসীকে বাংলায় সম্বোধন করলেন বঙ্গবন্ধু৷ দিল্লি থেকে বিশ্ব মহলে ছড়িয়ে পড়ল সেই বার্তা। সেই ভাষণে হিন্দিভাষী দিল্লিবাসীর সামনে ইতিহাসের মহা সন্ধিক্ষণের আর একটা পর্ব রচিত হলো।

পাক কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ভারতের মাটিতেই বঙ্গবন্ধু তার প্রথম রাজনৈতিক ভাষণটি দিলেন। লাখো মানুষ শুনল সেই কথা। বঙ্গবন্ধু বলছেন-‘আমার ভাই ও বোনেরা, আপনাদের প্রধানমন্ত্রী, আপনাদের সরকার, আপনাদের সৈন্যবাহিনী, আপনাদের জনসাধারণ যে সাহায্য এবং সহানুভূতি আমার দুখী মানুষকে দেখিয়েছেন চিরদিন বাংলার মানুষ তা ভুলতে পারবে না।

বঙ্গবন্ধুর সেই জলদগম্ভীর স্বরে বাংলায় ভাষণ উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি মাইলফলক৷ জানুয়ারির হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা সেদিন প্রবল জন উল্লাসে তেতে গিয়েছে। নিজের দেশের মাটিতে পৌঁছানোর আগেই বন্ধু ভারতের জনগণের অনুরোধে বাংলায় ভাষণ দিতে হয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেও তো এক নজির বিহীন ঘটন।

১০ জানুয়ারি দিল্লি থেকে সরাসরি রাজধানী ঢাকায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে উড়ে এসেছিল বিশেষ বিমান৷ ঢাকায় তখন রাজপথ-গলিপথে বিজয় মিছিল৷ লাখো মানুষের জমায়েত যেন মানব সমুদ্রের সুনামি। গণ গর্জনে কাঁপছিল রাজধানী ঢাকা। বিমান মাটি ছুঁয়ে ফেলতেই বাঁধভাঙা জনগণকে কে ধরে রাখবে। স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রনায়ক হয়ে বাংলাদেশে এলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান৷ আবেগে শিশুর মতো কেঁদে ফেললেন তিনি।

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর আগমন বাঙালী জাতির জন্য একটি বড় প্রেরণা হিসাবে কাজ করেছে। দীর্ঘ সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, আন্দোলন ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নেয়ার প্রশ্নে বাঙালী যখন বাস্তবতার মুখোমুখি- তখন পাকিস্তানের বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী। ২৯০ দিন পাকিস্তানের কারাগারে মৃত্যুযন্ত্রণা শেষে লন্ডন-দিল্লী হয়ে মুক্ত স্বাধীন স্বদেশের মাটিতে ফেরেন।

এর আগে পাকিস্তানের কারাগারে গোপনে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সকল প্রকার আয়োজন সম্পন্ন করেছিলেন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। এ ঘটনা জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তির জন্য পাকিস্তানের সামরিক জান্তাকে চাপ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ৬৭টি দেশের সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানকে চিঠি দেন। অন্যদিকে তিনি ইউরোপের ৫টি দেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সফর করে বিশ্বজনমত বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের অনুকূলে আনতে সক্ষম হন। ফলে পাকিস্তানের সামরিক জান্তার পক্ষে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা সম্ভব হয়নি।

লন্ডনে এবং দিল্লী উভয় জায়গাতেই তিনি পেয়েছিলেন বীরোচিত সংবর্ধনা। ৮ জানুয়ারি সকাল ৭টায় বিবিসি’র ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে প্রচারিত খবরে বলা হয় ’বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বিমানযোগে লন্ডনে আসছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।’

প্লেনটি বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর নেমে বঙ্গবন্ধু ভিআইপি লাউঞ্জে আসলে তাকে ব্রিটিশ বৈদেশিক দফতরের উপস্থিত কিছু কর্মকর্তা স্বাগত জানান। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে ব্রিটিশ ফরেন অফিসের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা স্যার ইয়ার মাদারল্যান্ড উপস্থিত হয়ে জানান ব্রিটিশ সরকার বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রীয় অতিথির মর্যাদা দিয়েছেন। সকাল ৮টার মধ্যেই বঙ্গবন্ধুকে ব্রিটিশ সরকারের সম্মানিত অতিথি হিসেবে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ক্যারিজেস হোটেলে নিয়ে আসা হয়। অল্প সময়ের মধ্যে ব্রিটিশ লেবার পার্টির নেতা (পরে প্রধানমন্ত্রী) হ্যারল্ড উইলসন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে এসে বলেন ‘গুড মর্নিং মি. প্রেসিডেন্ট।’

বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতির কথা জেনে হাজার হাজার বাঙালী হোটেল ঘিরে ‘জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে আকাশ-বাতাস মুখরিত করে। দুপুরের দিকে এক জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন ‘এক মুহূর্তের জন্য আামি বাংলাদেশের কথা ভুলিনি, আমি জানতাম ওরা আমাকে হত্যা করবে আমি আপনাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাব না, কিন্তু আমার জনগণ মুক্তি অর্জন করবে।’

বঙ্গবন্ধু যখন লন্ডনে পৌঁছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এ্যাডওয়ার্ড হিথ ছিলেন লন্ডনের বাইরে। বঙ্গবন্ধুর পৌঁছানোর কথা শুনে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করে প্রধানমন্ত্রী হিথ ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটে ছুটে আসেন। প্রধানমন্ত্রী হিথ তাকে নজীরবিহীন সম্মান দেখান। ইতিহাস সাক্ষী ঐদিন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিথ নিজে তার কার্যালয়ের বাইরে এসে গাড়ির দরজা খুলে দাঁড়িয়ে রইলেন, যতক্ষণ শেখ মুজিব গাড়ি থেকে বেরিয়ে না এলেন।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশের চিত্র এ রকম- সকাল থেকেই তেজগাঁও বিমানবন্দরের রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে সারিবদ্ধ মানুষ। বাংলাদেশ বেতার থেকে ধারাবিবরণী দেয়া হচ্ছিল। বিমানবন্দর ও রাস্তার দু’পাশে অপেক্ষমাণ জনতা। অন্যরকম উত্তেজনা সবার চোখেমুখে। বাঙালীর মহান নেতা আসছেন। লাখো মানুষের ভিড় রাজপথজুড়ে। কণ্ঠে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

যে দেশ এবং যে স্বাধীনতার জন্য জীবনবাজি রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সেই মাটিতে পা দিয়েই আবেগে কেঁদে ফেলেন। বিমানবন্দরে অস্থায়ী সরকারের সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা সবাই অশ্রুসজল নয়নে বরণ করেন ইতিহাসের এই বরপুত্রকে।

তেজগাঁও বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমানটি অবতরণ করার পর খোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে জনসমুদ্রের ভেতর দিয়ে রেসকোর্স ময়দানে এসে পৌঁছাতে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে। সেদিনকার রেসকোর্স ময়দান ছিল লোকে লোকারণ্য।

বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১৭ মিনিট জাতির উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। যা ছিল জাতির জন্য দিকনির্দেশনা। বাংলাদেশের আদর্শগত ভিত্তি কী হবে, রাষ্ট্র কাঠামো কী ধরনের হবে, পাকিস্তানী বাহিনীর সঙ্গে যারা দালালী ও সহযোগিতা করেছে তাদের কী হবে, বাংলাদেশকে বহির্বিশ্ব স্বীকৃতি দেয়ার জন্য অনুরোধ, মুক্তিবাহিনী, ছাত্র সমাজ, কৃষক, শ্রমিকদের কাজ কী হবে, এসব বিষয়সহ বিভিন্ন দিক নিয়ে নির্দেশনা। তিনি ডাক দিলেন দেশ গড়ার সংগ্রামে। রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত মন্ত্রমুগ্ধ জনতা দু’হাত তুলে সেই সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

যাদের প্রাণের ও ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সেদিন বঙ্গবন্ধু ভাষণের শুরুতে বলেন, ‘স্মরণ করি আমার বাংলাদেশের ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, বুদ্ধিজীবী, সিপাই, পুলিশ, জনগণকে, হিন্দু, মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের আত্মার মঙ্গল কামনা করে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আমি আপনাদের কাছে দুই একটা কথা বলতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘আজ থেকে আমার অনুরোধ, আজ থেকে আমার আদেশ, আজ থেকে আমার হুকুম ভাই হিসেবে, নেতা হিসেবে নয়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, আমি তোমাদের ভাই, তোমরা আমার ভাই, এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না পায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি আমার বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়, এই স্বাধীনতা পূর্ণ হবে না। যদি এ দেশের মা- বোনেরা ইজ্জত ও কাপড় না পায়। এই স্বাধীনতা আমার পূর্ণতা হবে না যদি এ দেশের মানুষ, যারা আমার যুবক শ্রেণী আছে তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়।’

দেশের উন্নয়নের জন্য ডাক দিলেন এভাবে- ‘যথেষ্ট কাজ পড়ে রয়েছে। আপনারা জানেন, আমি সমস্ত জনগণকে চাই, যেখানে রাস্তা ভেঙ্গে গেছে, নিজেরা রাস্তা করতে শুরু করে দেও। আমি চাই জমিতে যাও, ধান বোনাও, কর্মচারীদের বলে দেবার চাই, একজন ঘুষ খাবেন না, আমি ক্ষমা করব না।’

রেসকোর্সের জনসভায় তিনি মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে শিশুর মতো কান্নায় ভেঙে পড়েন। ভাষণে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকবি তুমি বলেছিলে ‘সাত কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি।’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তুমি দেখে যাও, তোমার আক্ষেপকে আমরা মোচন করেছি। তোমার কথা মিথ্যা প্রমাণিত করে আজ ৭ কোটি বাঙালী যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছে। হে বিশ্বকবি তুমি আজ জীবিত থাকলে বাঙালীর বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে নতুন কবিতা সৃষ্টি করতে।’

ভাষণের এক পর্যায়ে বলেন ‘আমার সেলের পাশে আমার জন্য কবর খোঁড়া হয়েছিল। আমি প্রস্তুত হয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমি বাঙালী, আমি মানুষ, আমি মুসলমান, একবার মরে দুইবার মরে না। আমি বলেছিলাম, আমার মৃত্যু এসে থাকে যদি আমি হাসতে হাসতে যাব। আমার বাঙালী জাতকে অপমান করে যাব না। তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইব না এবং যাবার সময় বলে যাব, জয় বাংলা, স্বাধীন বাংলা, বাঙালী আমার জাতি, বাংলা আমার ভাষা, বাংলার মাটি আমার স্থান।’

মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান যেমন সত্য তেমনি এ দেশের মাটিতে ভারতীয় সৈন্যের অনির্দিষ্টকালের অবস্থানের ফলে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়াও ছিল এক বাস্তব সত্য। আর তা ভেবে বঙ্গবন্ধু দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, ‘যারা জানতে চান আমি বলে দেবার চাই, আসার সময় দিল্লীতে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে যে সময় আলোচনা হয়েছে। আমি আপনাদের বলতে পারি, আমি জানি তাকে। তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করি। সে পন্ডিত নেহেরুর কন্যা, সে মতিলাল নেহেরুর ছেলের মেয়ে। তারা রাজনীতি করছে। ত্যাগ করছে। তারা আজকে সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়েছে। যেদিন আমি বলব সেই দিন ভারতের সৈন্য বাংলার মাটি ছেড়ে চলে যাবে। এবং আস্তে আস্তে কিছু সৈন্য সরায়ে নিচ্ছে।’

তিনি জনগণকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বলেন ‘আমি দেখায় দেবার চাই দুনিয়ার কাছে শান্তিপূর্ণ বাঙালী রক্ত দিতে জানে, শান্তিপূর্ণ বাঙালী শান্তি বজায় রাখতেও জানে।’

যুদ্ধাপরাধীদের গণবিরোধী ভূমিকা পালন করার ফলে মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর প্রতিহিংসাপরায়ণবশে অনেক সহিংস ঘটনা ঘটে। এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু সর্তকবাণী উচ্চারণ করেন, ‘আজ আমার কারও বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা নাই, একটা মানুষকে তোমরা কিছু বলো না, অন্যায় যে করেছে তাকে সাজা দেবো। আইনশৃঙ্খলা তোমাদের হাতে নিও না।’

বঙ্গবন্ধুর ভাষণে সেদিন সবাইকে দেশ গড়ার ডাক দেন। সে ভাষণটি হচ্ছে নতুন দেশ পুনর্গঠনের নক্সা ও ভবিষ্যত বাংলাদেশের রূপরেখা। পূর্বপ্রস্তুতিহীন এ সংক্ষিপ্ত ভাষণে অনেক বিষয়ের প্রতি বঙ্গবন্ধু দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। যা রাষ্ট্র ও জাতি গঠনে তাৎপর্য বহন করে। পাশাপাশি বহন করে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রনায়কোচিত দূরদৃষ্টির। ভাষণটি ছিল সংক্ষিপ্ত। এ সংক্ষিপ্ত ভাষণেই বাঙালী জাতি ও ভবিষ্যত বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম হন বঙ্গবন্ধু।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাঙালী জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের আরেকটি আলোকিত অধ্যায়। প্রকৃতপক্ষে ১০ জানুয়ারিতে বাংলার রাজনীতির মুকুটহীন সম্রাট সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা শেখ মুজিবকে পেয়ে বাঙালী বিজয়ের পরিপূর্ণ আনন্দ প্রাণভরে উপভোগ করেছে। এ দিনই বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রবেশ করে গণতন্ত্রের এক আলোকিত অভিযাত্রায়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং বাংলাদেশ একাত্ম হয়ে আছে একসূত্রে। যত দিন বাংলাদেশ থাকবে সেই অনন্তকাল পর্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হবে বঙ্গবন্ধুর নাম। দেশের স্বাধীনতার জন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য নিজেকে আত্মোৎসর্গ করেছিলেন বলেই বাঙালির পক্ষে স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা সম্ভব হয়েছিল। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির তিন নেতা বহিস্কার

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির তিন নেতা বহিস্কার

নিউজ মেট্রো প্রতিনিধি

দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজের কারণে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক আলী আব্বাসসহ তিন নেতাকে বহিস্কার করা হয়েছে।

বহিস্কৃত অপর দু’জন হলেন-দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ মোহাম্মদ আলী ও লিয়াকত আলী।দলীয় বিশৃংখলা সৃষ্টির জন্য সদস্য মুজিবুর রহমানকে সতর্ক করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান তিন নেতাকে বহিস্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে নিউজ মেট্রোকে বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করায় ওই তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় আরেকজনকে সতর্ক করা হয়েছে।

জানা যায়,  চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহবায়ক ও সদস্য সচিব কর্তৃক স্বাক্ষরিত জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর কমিটি প্রত্যাখ্যান করে গত  ৫ জানুয়ারি  চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দক্ষিণ জেলা বিএনপির বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভার পাল্টা কমিটির ঘোষণা দেন জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক আলী আব্বাসসহ কয়েকজন নেতা। এ ঘটনায় গত ৬ জানুয়ারি পাল্টা কমিটি গঠন, সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এবং সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সম্পর্কে কুৎসা রটনার অভিযোগ এনে আলী আব্বাস, শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও লিয়াকত আলীকে কেন্দ্র থেকে শো-কজ করা হয়েছিল।

ওয়ানডে ও টেস্ট খেলতে ঢাকায় ক্যারিবিয় দল

0
ওয়ানডে ও টেস্ট খেলতে ঢাকায় ক্যারিবিয় দল

তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট খেলতে আজ রবিবার ঢাকায় পৌঁছেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে দলটি। তবে করোনার ঝুঁকি, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শীর্ষ ১২ ক্রিকেটার বাংলাদেশ সফর থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
করোনায় ১০ মাসের বিরতির পর বাংলাদেশ দলের এটিই প্রথম আন্তর্জাতিক সিরিজ। গত বছর মার্চে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছিল বাংলাদেশ।
ঢাকায় এসে সাতদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকবে সফরকারীরা। সফরকালে পাঁচবার করোনা পরীক্ষা হবে তাদের।
আগামী ১৮ জানুয়ারি বিকেএসপিতে একদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরে তিন ম্যাচের (২০, ২২, ২৫ জানুয়ারি) ওয়ানডে সিরিজ। চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ২৯-৩১ জানুয়ারি তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে উইন্ডিজরা। ৩-৭ ফেব্রুয়ারি জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট এবং ১১-১৫ ফেব্রুয়ারি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে।

বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯ কোটি ছাড়িয়েছে

বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯ কোটি ছাড়িয়েছে

বিশ্বে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৮৪ হাজার ৫২৭ জনে। করোনায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৯ লাখ ৩৪ হাজার ৯২৫ জন। রবিবার ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে সর্বপ্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়।

করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৬ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ১২৩ জন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। এখনো আক্রান্ত অবস্থায় রয়েছেন ২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৪৭৯ জন।

করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হওয়ার হার ৯৭ শতাংশ এবং মারা যাওয়ার হার তিন শতাংশ। বর্তমানে আক্রান্তদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ এবং স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন ৯৯.৫ শতাংশ রোগী।

এদিকে বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় এবং ১৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। ওয়ার্ল্ডোমিটারের ওয়েব সাইটে দেয়া তথ্যে দেখা যায়, বাংলাদেশে রোববার (১০জানুয়ারি) পর্যন্ত ৫ লাখ ২১ হাজার ৩৮২ জন করোনা ভাইরাসে আক্রা্ন্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৭ হাজার ৭৫৬ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪লাখ ৬৬ হাজার ৬৪ জন।

নিউজ মেট্রো ডেস্ক

সমুদ্রে বিধ্বস্থ ইন্দোনেশিয়ার বোয়িং ৭৩৭-৫০০

0
সমুদ্রে বিধ্বস্থ ইন্দোনেশিয়ার বোয়িং ৭৩৭-৫০০

নিউজ মেট্রো ডেস্ক :

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই জাভা সাগরে বিধ্বস্থ হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে শ্রীভিজায়া এয়ারের বোয়িং ৭৩৭-৫০০ বিমানটি। জাভা সমুদ্র সৈকতে মিলেছে আরোহীদের লাশের খন্ডাংশ। একই সঙ্গে বিমানটির কিছু ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এ খবর জানিয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার সরকারি কর্মকর্তাদের বরাদ দিয়ে পত্রিকাটির খবরে বলা হয়, বিমানটি  মোট ৬২ জন যাত্রী নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা বিমান বন্দর থেকে পশ্চিম কালিমান্তান প্রদেশের পন্টিয়ানাক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল। আকাশে উড্ডয়নের পরপর সেটি বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে। কিছুক্ষণ পর নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। স্থানীয় গণমাধ্যমের ধারণা, ওড়ার চার মিনিটের মাথায় ১০ হাজার ফুট উপর থেকে ৬০ সেকেন্ডেরও কম সময়ে উড়োজাহাজটি পড়ে গেছে।

ইন্দোনেশিয়া পুলিশের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, রাজধানী জাকার্তার দক্ষিণ-পশ্চিমে সমুদ্র সৈকতে যাত্রীদের শরীর ও কাপড়ের খন্ডাংশ পাওয়া গেছে। বিমানটির কিছু ধ্বংসাবশেষও সেখানে পাওয়া যায় বলে পুলিশ জানায়।

টিকা নিলেন ব্রিটিশ রানী

টিকা নিলেন ব্রিটিশ রানী

নিউজ মেট্রো ডেস্ক :

করোনার টিকা নিয়েছেনন ব্রিটিশ রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এবং তার স্বামী ডিউক অব এডিনবার্গ প্রিন্স ফিলিপ। বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
প্রাসাদের বরাদ দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়,  ৯৪ বছর বয়সী রানী ও ৯৯ বছর বয়সী তাঁর স্বামী দু’জনই  শনিবার উইল্ডসর প্রসাদে রাজ পরিবারের একজন চিকিৎসকের কাছে করোনার টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেন।
লকডাউনের পর থেকে রানী এলজাবেথ ও স্বামী ফিলিপ উইল্ডসর প্রসাদেই অবস্থান করছেন। মহামারি করোনা থেকে বাঁচতে যুক্তরাজ্যে এরই মধ্যে দশ লাখের বেশি মানুষ করোনার টিকা গ্রহণ করেছেন।
করোনা মহামারি থেকে নিজেদের রক্ষায় ইতিমধ্যে ব্রিটেনে ১০ লাখের বেশি লোক টিকা গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি নতুন ধরনের করোনা ভাইরাসে সেখানে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন জায়গায় লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।